নরসিংদী সদর উপজেলায় ধাতব যন্ত্রের উপর্যুপরি আঘাতে মাথা থেঁতলে দিয়ে ও পেট কেটে এক গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী মো. সোহেল মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হাজীপুর ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত গৃহবধূকে শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত ওই গৃহবধূর নাম সুবর্ণা আক্তার (২১)। তিনি নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার বাড়ির ভাড়াটে মো. সোহেল মিয়ার স্ত্রী। সোহেল স্থানীয় একটি হলুদ-মরিচ ভাঙানোর কারখানায় কাজ করতেন। সুবর্ণা-সোহেল দম্পতির ছয় মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

নিহতের স্বজন ও পুলিশ বলছে, শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে সাংসারিক অভাব-অনটন নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় দুজনেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সোহেল ঘরে থাকা একটি রেঞ্চ (ধাতব করাত) দিয়ে সুবর্ণার নাক-মুখ-মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন। এতে তার মুখমণ্ডল থেঁতলে যায়। এ সময় সুবর্ণা বাধা দিলে তার পেটে রেঞ্চ ঢুকিয়ে দেন সোহেল। এতে সুবর্ণার নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে যায়। এ সময় তাদের ছেলে পাশেই ঘুমিয়ে ছিল।

পরে সুবর্ণার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে নরসিংদী মডেল থানায় খবর দেন। পরে রাত ২টার দিকে ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অভিজিৎ চৌধুরী ঘটনাস্থলে গিয়ে সুবর্ণাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়। আজ সকালে তার মরদেহ ওই হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।

নিহত গৃহবধূর বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়েজামাই সোহেল প্রায়ই নেশা করত। অভাবের সংসারে এ নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। তবে গত রাতে কী নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছে, ঠিক জানি না। আমি এর বিচার চাই।

নরসিংদী মডেল থানার এসআই অভিজিৎ চৌধুরী জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধারের পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। তিনি আমাদের কাছে পুরো ঘটনা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

রাকিবুল ইসলাম/এনএ