অবশেষে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘেঁষে বসানো পাবলিক টয়লেট দুটি সরিয়ে নিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী ও সচেতন মহল। তারা শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষাসহ সব সময় এটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। 

বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে শহীদ মিনার চত্বর থেকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি পিকআপ ভ্যানে করে টয়লেট দুটি নিয়ে যাওয়া হয়। 

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (০১ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকাপোস্ট ডটকমে ‘শহীদ মিনার ঘেঁষে পাবলিক টয়লেট’ শিরোনামে ভিডিওসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে পড়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। সংবাদ প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শহীদ মিনার চত্বর থেকে টয়লেট দুটি সরিয়ে নেওয়া হলো। 

সরেজমিনে দেখে গেছে, রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে থাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চার গজের মধ্যে স্থাপন করা পাবলিক টয়লেট দুটি অপসারণে কাজ করছেন দুজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী । এক মাসেরও বেশি সময় ধরে এই টয়লেট দুটি সেখানে ছিল। যদিও এরপাশেই পাবলিক লাইব্রেরি হল রুমে টয়লেট রয়েছে। এ ছাড়াও জেলা শিল্পকলা একাডেমির ভেতরে উন্নতমানের বেশ কিছু টয়লেট দেখা গেছে। শহীদ মিনারের কোল ঘেঁষে এভাবে টয়লেট স্থাপন করায় অনেকই ক্ষুদ্ধ ছিলেন।

এদিকে টয়লেট দুটি অপসারণ হওয়ায় ঢাকা পোস্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রঙ্গপুর নাট্যধারার প্রচার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মুকুল বলেন, শহীদ মিনারের পাশে টয়লেট স্থাপনের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ছিল। তবে ভালো লাগছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর তাদের ভুল বুঝতে পেরে তা সরিয়ে ফেলেছে। আমরা চাই শহীদ মিনার চত্বর সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুক। এখানে ভবিষ্যতে যাতে টয়লেট বসানো না হয়, সেটিও খেয়াল রাখতে হবে। 

স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মীদের অভিযোগ, রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সব সময়ই অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকে। সন্ধ্যা হলেই শহীদ বেদির ওপর জুতা পায়ে চড়ে বসে অনেকেই আড্ডা দেয়, ধূমপান করে। পাশাপাশি দুটি পাবলিক টয়লেট থাকায় সেখানকার মল-মূত্র থেকে ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষণ হচ্ছিল। জাতীয় দিবসগুলো ঘিরে বিভিন্ন সময়ে ধোয়ামোছা করা হলেও বাকি সময়ে কেউই এই শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা নিয়ে ভাবেন না। 

এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ কুমার সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, টয়লেট দুটি জেলা প্রশাসনের অনুরোধে বইমেলা চলাকালে অস্থায়ী হিসেবে বসানো হয়েছিল। এরপর সেখানে বিসিক উদ্যোক্তা মেলা হয়েছে। মূলত পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সাম্প্রতিক সময়ে হয়ে যাওয়া মেলা চলাকালে মানুষের সুবিধার্থে টয়লেট স্থাপন করা হয়েছিল। আমরা বুধবার দুপুরে ওই টয়লেট দুটি সরিয়ে নিয়েছি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর