গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে বিভাগের আট জেলার ৯৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৬৯ জনের। শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশে। এর আগে সোমবার ২৯৭, রোববার শনাক্ত ৩২১ ও ৩ জনের মৃত্যু এবং শনিবার ১০১ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরে ৮৭, দিনাজপুরে ৬৩, নীলফামারীর ২৮, পঞ্চগড়ের ২০, গাইবান্ধার ১৯,  ঠাকুরগাঁওয়ে ১৮ এবং লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ১৭ জন করে করোনা পজিটিভ হয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২৬১ জন। বর্তমানে বিভাগে করোনা আক্রান্ত গুরুত্বর ১০৩ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সংকটাপন্ন ১৭ রোগীকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। বাকিদের বাসায় রেখে চিকিৎসা চলছে। পুরো বিভাগজুড়ে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ রয়েছেন ৫ হাজার ৯১৪ জন রোগী।

পরিচালক আরও জানান, রংপুর বিভাগে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৬ হাজার ৪১৭ এবং ৩৩৬ জন মারা গেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩৯৭-তে।

এ ছাড়া জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬৩ জন মারা গেছে গাইবান্ধায়। এ জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৩৮ জনের। ঠাকুরগাঁওয়ে মৃত্যু ২৫৬ ও শনাক্ত ৮ হাজার ৪৩৬, নীলফামারীতে মৃত্যু ৯০ ও শনাক্ত ৫ হাজার ২০৯, পঞ্চগড়ে মৃত্যু ৮২ ও শনাক্ত ৪ হাজার ২৫৫, কুড়িগ্রামে মৃত্যু ৬৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৮৮৭ এবং লালমনিরহাট জেলায় মৃত্যু ৭০ ও আক্রান্ত ৩ হাজার ১১৭ জন।

তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ৩ লাখ ২৬ হাজার ১৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬২ হাজার ৫৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৬১ জনের। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৫৬ হাজার ১৪২ জন।

এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট জেলাকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বা রেড জোন বলা হয়েছে। এ ছাড়া ইয়েলো জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁও জেলা। দিন দিন করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে ভারতের কোলঘেঁষা এই বিভাগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদফতর।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, গণটিকাসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে টিকার আওতায় আনার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমে আসছে। বর্তমানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এবং করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই