স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে  চায়না খাতুন (৩০) নামে দুই কন্যাসন্তানের জননী এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে যে এটি আত্মহত্যা। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি, স্বামী অত্যাচার করে তাকে মেরে ফেলেছেন।

শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া তোরাপ শেখেরপাড়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে গৃৃহবধূর স্বামীর বাড়ি থেকে তার স্বামীর ঘরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ঘটনার পর গৃহবধূর স্বামী রেজাউল শেখ (৩৫) বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা থেকে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করে। তিনি একই এলাকার স্থানীয় আফসার শেখের ছেলে।

নিহত চায়না খাতুনের বাবা সিরাজ দেওয়ান জানান, ৯ বছর আগে রেজাউলের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে দিই। বিয়ের পর থেকেই সে আমার মেয়ে কে নানাভাবে অত্যাচার করত। ঠিকমতো রোজগার না করে নেশা গ্রহণসহ নানা বাজে আড্ডায় লিপ্ত থাকত। আমার মেয়ে ও দুই নাতনির ঠিকমতো ভরণ-পোষণ দিত না। প্রায়ই আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দিত। 

সংসারে ঝগড়া-ঝাঁটি লেগে থাকায় আমি সাধ্যমতো চাল-ডাল, টাকাপয়সা দিয়ে সাহায্য করতাম। শুক্রবার রাতে এসব বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলে রেজাউল আমার মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করে এবং সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। সকালে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সব জেনে ছুটে এসে আমি মেয়ের লাশ দেখতে পাই। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার জানান, প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী আত্মহত্যা বলে মনে হয়েছে। চায়নার স্বামী একজন মাদকাসক্ত বলে জানতে পেরেছি। অভাবের সংসারে ঝগড়া-বিবাদের এক পর্যায়ে অভিমান করে সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।

তারপরও প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা হচ্ছে। রেজাউলকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

মীর সামসুজ্জামান/এনএ