চলতি মাসেই রায়হান হত্যার চার্জশিট
রায়হান আহমদ
সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে যুবক রায়হান আহমদ নিহতের ঘটনায় চলতি মাসেই চার্জশিট জমা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুরোদমে কাজ করছে। তবে এই মাসের কত তারিখে চার্জশিট জমা হবে সেই বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কোনো কর্মকর্তা বলতে পারছেন না।
সম্প্রতি এই মামলায় এসআই হাসান উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের পর নতুন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে, যা চার্জশিটের কাজকে আরো বেগবান করেছে বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার খালেক উজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রায়হান হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট জমা দিতে পুরোদমে কাজ চলমান রয়েছে। এই মাসেই চার্জশিট জমা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ১১ অক্টোবর সিলেট নগরের আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে এনে নির্যাতন করার পর ভোরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার পরদিন কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তদন্ত করছে পিবিআই।
বিজ্ঞাপন
আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর পরপরই লাপাত্তা হন প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর। তাকে পালাতে সহযোগিতা ও রায়হান হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় আরও চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ঘটনার প্রায় একমাস পর ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্ত থেকে এসআই আকবরকে গ্রেপ্তার করে সিলেট জেলা পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় সর্বশেষ এসআই হাসানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি রায়হান হত্যা মামলায় পুলিশ লাইনস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ জানুয়ারি এসআই হাসানকে গ্রেপ্তারের পর ৩০ জানুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে তিনদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শেষে ৩১ জানুয়ারি তাকে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রায়হান হত্যার পর গত বছরের ২১ অক্টোবর এসআই হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। এ নিয়ে রায়হান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হল।
পিবিআই আরও জানায়, এসআই আকবরকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যমতে তাকে পালাতে সহযোগিতা করার প্রমাণ পাওয়ায় এসআই হাসানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর পুরো সিলেটে আন্দোলনের ঝড় উঠে। ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন।
তুহিন আহমদ/এমএসআর