কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাট ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের বয়স্ক সিংহ ‘সোহেল’র মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিংহের বেষ্টনীতে হঠাৎ নিথর হয়ে যায় সোহেল।

প্রজাতি অনুসারে বয়সের ভারে ন্যুব্জ হওয়া সিংহরাজ সোহেল ২২ বছরের মাথায় মারা গেছে বলে জানান সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম। এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় তিনি চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জিডিতে মাজহারুল উল্লেখ করেন, সাফারি পার্কের বয়স্ক সিংহ বুধবার সন্ধ্যায় মারা যায়। একটি সিংহ স্বাভাবিকভাবে ১৫ থেকে ১৮ বছর বাঁচে। মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে সিংহটি ২০০৪ সালে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে আনা হয়। তখন তার বয়স ছিল ৪ বছর। তিন থেকে চার বছর ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিল সিংহটি।

সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক আরও বলেন, বার্ধক্যের উল্লেখযোগ্য সব লক্ষণ সিংহটির শরীরে ক্রমান্বয়ে প্রকাশ পাচ্ছিল। ২০১৯ ও ২০২০ সালে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক পৃথকভাবে সিংহটির চিকিৎসা করেন। তারাও পর্যবেক্ষণে সিংহটির বার্ধক্য ও আয়ুষ্কাল শেষের দিকে বলে তখন উল্লেখ করেছিলেন।

চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুপন নন্দী ও পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন মৃত সিংহের ময়নাতদন্ত করেন।

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় ১৯৯৯ সালে পথচলা শুরু ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের। ভেতর-বাইরে ৯০০ হেক্টর আয়তন নিয়ে যাত্রা করা পার্কে বিপুল পরিমাণ মাদার ট্রিসহ (গর্জন) রয়েছে নানা প্রজাতির বনজ গাছ। সপ্তাহের মঙ্গলবার ছাড়া বাকি ছয় দিন দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস মিশে যায় প্রাণিকুলের কোলাহলের সঙ্গে।

পার্কের ১৯টি বেষ্টনীর মধ্যে সংরক্ষিত আছে বিচিত্র সব প্রাণী। পার্কের ভেতরে পালিত হচ্ছে হাতি, বাঘ, সিংহ, জলহস্তী, গয়াল, আফ্রিকান জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট, ভাল্লুক, বন্য শূকর, হনুমান, ময়ূর, স্বাদু ও লোনা পানির কুমির, সাপ ও বন গরুসহ দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির প্রাণী।

সাইদুল ফরহাদ/এনএ