সরকারপ্রধানকে ইস্ত্রি করা তথ্য দিতে চাই না : পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান / ফাইল ছবি
যেকোন গবেষণা বা রিপোর্ট ইস্ত্রি করা হলে সেটা দেশের অর্থনীতির জন্য খারাপ কিছু বয়ে আনে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকার প্রধানের কাছে আমি কোনো ইস্ত্রি করা তথ্য দিতে চাই না। কারও কারও কাছে অপছন্দ হলেও আমার দায়িত্ব হচ্ছে বাস্তব চিত্র তুলে ধরা।
বিজ্ঞাপন
৭ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পনা কমিশন ও মন্ত্রণালয়ের অধীভুক্ত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি), পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ, শিল্প ও শক্তি বিভাগ, কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগ, ভৌত অবকাঠামো বিভাগ, বিআইডিএস ও এনএপিডি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ত্রৈ-মাসিক সমন্বয় সভা করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এ সভার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে এসব কথা বলেন।
সামষ্টিক অর্থনীতি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি চিত্র নিয়ে অর্থনীতিবিদ, বিশ্ব্যাব্যাংক, আইএমএফসহ আরও অনেকে প্রশ্ন তোলে— ঢাকা পোস্টের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিআইডিএস একটি গবেষণা সংস্থা। অবশ্যই তারা নিরপেক্ষভাবে গবেষণা করবে। ওয়াশিং বা ইস্ত্রি করা কোনো রিপোর্ট তাদের কাছে আমরা চাই না। প্রত্যেকটা গবেষণায়ই বাস্তব তথ্য চাই। কোনো ইস্ত্রি করা তথ্য অন্তত আমি গ্রহণ করবো না। আমার হাত দিয়ে কোনো ইস্ত্রি করা তথ্য প্রধানমন্ত্রীকে দেবো না। এটা আমার দায়িত্ব।
বিজ্ঞাপন
যদি কারো অপ্রিয়ও হয় তারপরও বাস্তব চিত্র নজরে আনতে হবে জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যেকোন গবেষণা বা রিপোর্ট ইস্ত্রি করা হলে সেটা দেশের অর্থনীতির জন্য খারাপ কিছু বয়ে আনে। এজন্যই সব রিপোর্টই রিয়েল চিত্র অনুযায়ী হতে হবে। আমি বিআইডিএসকে বলেছি, যেকোন রিপোর্টেই সমস্যা চিহ্নিতের পাশাপাশি সমাধানের বিষয়েও সুনির্দিষ্ট সুপারিশ থাকতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নিয়ে মানুষের আগ্রহ অনেকগুণ বেড়ে গেছে। এটার ভালো দিক হলো মানুষ জানতে চায় আমরা কি কি করছি। প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ না করলে সাধারণ জনগণের নজরে পড়তে হবে। সাধারণ জনগণ কোনো দোষারোপ করুক এটা মানতে পারবো না। সরকারের কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রই জনগণের জানার অধিকার আছে।’
এম এ মান্নান বলেন, ‘বিআইডিএসকে নির্দেশনা দিয়েছি প্রতি তিনমাস অন্তর অন্তর বছরে চারবার দেশের অর্থনীতির সামষ্টিক পরিস্থিতি ওঠা-নামা নিয়ে গবেষণামূলক রিপোর্ট দিতে হবে। এ রিপোর্ট একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করব। বিআইডিএসকে পেশাজীবী, গবেষণামূলক ও পান্ডিত্যপূর্ণ রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এর বাইরেও বছর শেষে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন করতে হবে বিআইডিএসকে। তবে এ রিপোর্টে মুন্সিয়ানা থাকতেই হবে। তারা যে কাজে সৃষ্টি হয়েছে সে কাজের ধার থাকতে হবে রিপোর্টে।’
মন্ত্রী আরও জানান, ‘পরিকল্পনা কমিশন বা আমাদের অন্যান্য বিভাগগুলোতে যেসব পদ খালি আছে সেগুলো দ্রুত পূরণ করতে হবে। ইকনোমিক ক্যাডার মার্জ হওয়াতে বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে একটা তারতম্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে এটা সাময়িক, এটাকে ঠিক করার ব্যবস্থা নিয়েছি। এখানে কিছু প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে, লোকজন চালাচালি করতে হবে। এতো বড় ক্যাডার মার্জ হওয়াতে সাময়িক কিছু কম্পন সৃষ্টি হয়েছে। এ কম্পোনটাকে দূর হলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, এর বাইরেও বিবিএস ও বিআইডিএসকে প্রতি তিনমাস পরপর দেশের স্বাস্থ্যখাতের চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদন দিতে হবে। বিবিএস সারাদেশ থেকে ডাটা সংগ্রহ করে তথ্যবহুল রিপোর্ট দেবে, আর বিআইডিএস গবেষণামূলক রিপোর্টের পাশাপাশি সমস্যা থেকে উৎরানোর পরামর্শ দেবে।
এসআর/এসএম