ঋণ পুনঃতফসিল সিদ্ধান্ত পর্ষদকে দেওয়ায় খুশি বিএবি
খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল কারার সিদ্ধান্ত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ওপর ছেড়ে দেওয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার।
বুধবার (২০ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বিএবির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের ফলে সবার মঙ্গল হবে। নতুন গভর্নর ঋণ পুনঃতফসিলের ভার ব্যাংকের ওপর দিয়েছেন। এটা যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ। এটা ব্যাংকের হাতে দিয়ে দেওয়ার ফলে আমাদের পরিশ্রম অনেক কমে যাবে। একই সঙ্গে ব্যাংকের কর্ম ও রিকভারি অনেক বেড়ে যাবে।
‘এখন যার যার ব্যাংক সে কন্ট্রোল করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকে আর তাকিয়ে থাকতে হবে না৷ ব্যাংক নিজেই ঋণ পুনঃতফসিল করবে।’
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনের ক্ষমতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের হাতে দিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘ব্যাংকগুলো তার গ্রাহক সম্পর্কে ভালো জানে। তারা বুঝতে পারবে কোন গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করছে। কাদের আবার ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে। খেলাপি ঋণের ওপর দেশের ব্যাংকিং খাতের অনেক কিছু নির্ভর করে। খেলাপি ঋণ বেশি থাকলে দাতা সংস্থা তা ভালোভাবে নেয় না। করোনা এবং বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলে নতুন নীতিমালা দেওয়া হয়েছে।
বিএবির চেয়ারম্যান মনে করেন এ সার্কুলারের ফলে ব্যাংকের জবাবদিহি বাড়বে। তিনি বলেন, যারা অমান্য করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এটাকেও আমরা স্বাগত জানাই।
ব্যাংকাররা শাস্তির বিষয় মেনে নেবেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেন মেনে নেবে না? আমরা মেনে নিয়েছি, ব্যাংকাররাও মেনে নেবে। কোনো ব্যাংক অন্যায়-অপরাধ করলে শাস্তির আওতায় আসা উচিত। সে ক্ষেত্রে এ সার্কুলার একটা ল্যান্ডমার্ক।
গভর্নরের সঙ্গে এই সাক্ষাতে দাবিদাওয়া প্রাধান্য ছিল না বলেও জানান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে একজন নতুন গভর্নর এসেছেন। আমরা দীর্ঘদিন থেকে তাকে চিনি। নতুন গভর্নরকে শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য আমরা এসেছি৷ শুধু শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। কোনো দাবিদাওয়া বা অন্য কোনো সংকট সমাধান বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঋণ পুনঃতফসিলের যে ফাইল আগে আসত, সেগুলো এখন আর বাংলাদেশ ব্যাংকে আসবে না। ফাইল এলে সিদ্ধান্ত দিতে অনেক সময় লাগত। ব্যাংক নিজেরা সেটা করতে পারবে- এ সিদ্ধান্তকে বিএবি সাধুবাদ জানিয়েছে।
সৌজন্য সাক্ষাতেও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ব্যাংকে আমানত ও ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৬ ও ৯ শতাংশ বেঁধে দিয়ে যে আদেশ দেওয়া হয়েছিল, সেটি পর্যালোচনার অনুরোধ ব্যাংকারদের পক্ষ থেকে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ব্যাংকাররা বলেছেন, শিল্প, উৎপাদনশীল খাত ও রপ্তানি সংশ্লিষ্ট খাতের ঋণে ৯ শতাংশ সুদ ঠিকই আছে। তবে বিলাসবহুল পণ্যে ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ সুদের সীমা বাড়ানো যায় কি না, সেটি বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছে বিএবি। আবার এখন মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এই বাস্তবতায় ব্যক্তি ঋণের সুদহার পর্যালোচনার দাবিও করা হয়েছে। সুদ হারের ক্ষেত্রে বিএবি যে প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেটি পর্যালোচনা করবে।
এসআই/এসকেডি