ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্লু-সিপ নামে নতুন একটি পণ্য পুঁজিবাজারে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল। প্রতিমাসে মাত্র ৩ হাজার টাকা জমা দিয়ে বিনিয়োগকারীরা এই স্কিম নিতে পারবেন। স্কিমের একাধিক বিনিয়োগ নিয়ে প্রতি মাসে মৌলভিত্তিক শেয়ার কেনা হবে। পাশাপাশি ধারাবাহিক ক্রয়ের মাধ্যমে সেরা গড় মূল্য তৈরি হবে, যা পরবর্তীতে ভালো মুনাফা দেবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি দেখভাল করার জন্য রয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ক্যাপিটালের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল। প্যাকেজটির স্থায়িত্বকাল হবে ৩ থেকে ১০ বছর।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগরে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কায়সার হামিদ, সিএমজেএফের সভাপতি জিয়াউর রহমান, বাাংলাদেশ ফাইন্যান্স ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরুন প্রসাদ পাল এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম নাজমুল আহসান।

আরও পড়ুন : বিডি ফাইন্যান্সের নতুন নাম ‘বাংলাদেশ ফাইন্যান্স’

প্রডাক্টটির বিশেষত্ব বোঝাতে গিয়ে কায়সার হামিদ বলেন, সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে একটা বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশে সঞ্চয়ের সুবিধাগুলো খুব ব্যাপকভাবে প্রচলিত ও ক্রেতাদের কাছে সুপরিচিত। যার মধ্যে রয়েছে সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক ডিপোজিট ও পোস্টাল সেভিংস সার্টিফিকেট। কিন্তু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খুব সীমিত সুযোগ রয়েছে। বিনিয়োগ বলতে আমরা সাধারণত বুঝি যেটা মূল্যস্ফীতি শুধু সমন্বয় করে না, ভবিষ্যতে একটা গ্রাহকের একটি বড় ধরনের সম্পদ পুঞ্জিভূত করার সুযোগ দেয় ও সম্পদ তৈরি করার ক্ষেত্রে সুযোগ করে দেয়।

তিনি বলেন, এই সঞ্চয়কে বিনিয়োগে রূপান্তর করতেই যারা ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারী আছেন তাদের জন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল নিয়ে এসেছে সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্লান। বিষয়টাকে যদি আমরা এভাবে ব্যাখ্যা করি তাহলে দাঁড়াবে যে- পুঁজি হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ এবং যারা সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী তাদের পুঁজিবাজার বিষয়ক সম্যক জ্ঞানের সুযোগ একেবারেই সীমিত। তাদের ক্ষেত্রে খুব বেশি একটা প্রফেশনাল সার্ভিস পর্যাপ্ত না বললেই চলে।

তিনি আরও বলেন, সব শেয়ার হোল্ডার বা বিনিয়োগকারীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সেবা বাজারে কিছুটা হলেও প্রচলিত আছে। সঞ্চয়কারীদের জন্য ক্যাপিটাল মার্কেটের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তার নিজস্ব সম্পৃক্ততা না এনে একটি সুচারু বিনিয়োগের মাধ্যমে একটা ক্ষুদ্র লক্ষ্যকে বৃহৎ অংকে পরিণত করাই হচ্ছে সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্লান। সেটাই বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল নিয়ে এসেছে সাধারণ গ্রাহকদের জন্য যার নাম হচ্ছে ব্লু-সিপ।

বরুন প্রসাদ পাল বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশই অনভিজ্ঞ; এমনকি অভিজ্ঞ বলে দাবি করা ব্যক্তিরাও ততটা বোঝেন না বলেই সাধারণ বিনিয়োগকারীকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এমন সমস্যার সমাধান করতেই সত্যিকার গবেষকদের সমন্বয়ে এই প্রডাক্টটির পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুঁজিবাজার নিয়ে এই গবেষণা পরীক্ষিত এবং এর ফল বেশ ইতিবাচক। 

আরও পড়ুন : ‘অর্থনীতির চালিকা শক্তি হবে শেয়ারবাজার’

ব্লু-সিপ প্রডাক্ট হেড ইনাম আহমেল হাসান বলেন, ব্লু স্লিপের মাধ্যমে বড় বিনিয়োগকারীরা কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন। এই বিনিয়োগের অভিজ্ঞ পোর্টফলিও ব্যবস্থাপকেরা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবেন। সাধারণত মূল্যস্ফীতিকে সমন্বয় করে যে সঞ্চয় হয় তার পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম হয়; কিন্তু ব্লু-সিপে বিনিয়োগের মাধ্যমে সঞ্চয়টা একটা মহীরুহ হয় এবং বড় আকারে মুনাফা তৈরি করে।

তিনি বলেন, জাতীয় বাজেট অনুসারে ব্যক্তি বিনিয়োগ ১৫ শতাংশ করের ব্যবস্থা উঠে যাওয়ায় পুরো ব্যক্তি বিনিয়োগটাই কর অব্যাহতি পাবে। পাশাপাশি লভ্যাংশটাও করমুক্ত থাকবে। সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান-সিপ মূলত জনপ্রিয় প্রডাক্ট; আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে এখনও এটা খুব বেশি জনপ্রিয় হয়নি। তবে এটার মাধ্যমে মুনাফার একটা ভালো গড় বের করা সম্ভব ও ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি কমিয়ে আনা সম্ভব।

এমআই/কেএ