অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দাদের অভিযান

অভিযান চালিয়ে রাজধানী মোহাম্মদপুরে দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

প্রতিষ্ঠান দুটি হলো- জেন এয়ার টেকনোলোজি ও জেন এয়ার (বিডি) লিমিটেড।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এলপিজি কনভার্সনের ব্যবসা পরিচালনা করায় ভ্যাট গোয়েন্দা দল অভিযান চালিয়েছে। এতে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ মিলেছে। ২৩ ডিসেম্বর অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। সংস্থার সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মহি উদ্দিন এতে নেতৃত্ব দেন।

তিনি বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠাটির মোহাম্মদপুরের ঠিকানায় গত চার মাসে প্রায় এক কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য উদ্ধার করা গেছে। এই সেবার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জব্দকরা ভ্যাট সংক্রান্ত দলিলাদি আরও যাচাই-বাছাই করে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইন অনুযায়ী মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্দারা জানায়, এক সেবাগ্রহীতার অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দারা বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) অভিযানটি পরিচালনা করে। সংস্থার সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মহি উদ্দিন এতে নেতৃত্ব দেন। অভিযানে একই ঠিকানায় তাদের দুটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়। এদের মালিক একই ব্যক্তি।

সংস্থাটি জানায়, প্রতিষ্ঠান দুটি স্ট্যাগ, সিজিএস, রকল ও এটলাস কপকো নামের চারটি ব্রান্ডের গাড়ির এলপিজি কনভার্সন করে থাকে। প্রতি গাড়িতে তারা ক্রেতার কাছ থেকে ৫০-৬০ হাজার টাকা সেবামূল্য গ্রহণ করে। অভিযানে ওই ঠিকানায় গোয়েন্দারা তাদের ভ্যাট নিবন্ধন দেখতে পাননি।

সংশ্লিষ্ট মোহাম্মদপুর ভ্যাট সার্কেলে যাচাই করে দেখা যায়, ওই সার্কেলে বিগত মাসগুলোতে প্রতিষ্ঠান দুটির কোনো রিটার্ন জমা হয়নি। গোয়েন্দা দলের কাছে তারা এ সংক্রান্ত স্বীকারোক্তিও দিয়েছে।

অভিযানকালে কাগজপত্র যাচাইয়ে প্রাথমিকভাবে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জনৈক আবুল কাশেম রনি অভিযোগে বলেন, আমি কনভার্সন চার্জ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দিলে প্রতিষ্ঠানটি আমাকে একটা কাঁচা ক্যাশ মেমো দেয়। আমি ভ্যাট চালান মূসক-৬.৩ চাইলে তারা নানান টালবাহানা করতে থাকে। পরে আমার আরও সন্দেহ হয়, তারা ভ্যাট ফাঁকির সঙ্গে জড়িত। আমি তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা প্রত্যাশা করছি।

গোয়েন্দার দল অনুসন্ধানে দেখতে পান, উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামে চট্টগ্রামের ঠিকানায় নিবন্ধন রয়েছে। এদের মূসক নম্বর ০০২৫২৬৭২৫-০৫০৫, ০০১৯১৮৬২৭-০৫০৫। তবে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ব্যবসা ওই নিবন্ধের অন্তর্ভুক্ত নয়। ভ্যাট আইন অনুসারে, একই মালিকানাধীন ভিন্ন ঠিকানায় একই নিবন্ধের আওতায় ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় নিবন্ধন নিতে হবে এবং সবগুলো ব্যবসা অনলাইন ভ্যাট সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করে মাসিক রিটার্ন জমা দিতে হবে। 

অভিযানে দেখা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ভ্যাটের আওতাবহির্ভূত থেকে এবং অতি গোপনে তারা এই ব্যবসা পরিচালনা করছে। গোয়েন্দার দল প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সহযোগিতায় সংরক্ষিত বাণিজ্যিক দলিলাদি এবং হিসাব শাখার কম্পিউটারে রক্ষিত সেবা বিক্রি সংক্রান্ত তথ্যাদি জব্দ করে। জব্দকরা ভ্যাট সংক্রান্ত দলিলাদি আরও যাচাই-বাছাই করে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আরএম/এফআর