সিপিডি’র ভার্চুয়াল সংলাপ

কয়লা ও তেলভিত্তিক জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্বের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি এ খাতে অদক্ষতা, দুর্নীতি ও অসঙ্গতি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বিদ্যুৎ খাত: ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও উদ্যোগসমূহ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে এ অভিমত ব্যক্ত করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও সংশ্লিষ্টরা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) সংলাপটির আয়োজন করে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরকারের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক পরিকল্পনার অগ্রাধিকারমূলক খাত। কোভিড-১৯ অতিমারির পরিপ্রেক্ষিতে এ খাতে সামগ্রিক অবস্থান ও কৌশলগুলো পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন আছে।

তারা বলেন, গত এক দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা ও গ্রাহক বেড়েছে। তারপরও আর্থিক দায়, ভর্তুকি ও ঋণের চাপ বাড়ছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে উন্নত সঞ্চালন ও বিতরণ প্রক্রিয়া অপরিহার্য।

প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত গড়ে তোলার ওপর জোর দেন সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম সংলাপে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি এতে বলেন, দেশের শতকরা প্রায় ৩৭ ভাগ বিদ্যুৎকেন্দ্রে এখনো ৪০ শতাংশের কম দক্ষতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। অদক্ষতায় নজর দেওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি মিশ্রণের ক্ষেত্রে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য বিদ্যুৎ খাতের লক্ষ্য এবং কৌশল নির্ধারণে সিপিডি কয়েকটি সুপারিশ পেশ করে। এতে বিদ্যুৎ খাতের চাহিদায় যৌক্তিক প্রক্ষেপনের ওপর জোর দিয়ে বলা হয়, আবাসিক ও শিল্পখাতের চাহিদা এবং ভবিষ্যৎ চাহিদার শ্লথ প্রবৃদ্ধিকে বিবেচনায় রেখে চাহিদা প্রক্ষেপণ করতে হবে।

তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোকে বন্ধ এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পকে গুরুত্বের কথা উঠে আসে সংলাপে।  

টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে এখনই পুরোপুরি নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সৌর বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করা সম্ভব না। তবে ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরশক্তির ব্যবহার নিয়ে সরকার ব্যাপকভাবে কাজ করছে। জলবিদ্যুৎ আমদানি নিয়েও পরিকল্পনা চলছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাওয়ার সেল’র মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, পরিবেশবান্ধব জ্বালানিকে গুরুত্ব দিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বিনিময় নীতিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি, অদক্ষতা ও আর্থিক দায় মোকাবিলা করতে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে।

সংলাপে বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম, বুয়েট অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম এবং সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ’র পরিচালক শাহরিয়ার আহমেদ সংলাপে বক্তব্য রাখেন।

এসআই/এসআরএস