এসএমই সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা শক্তিশালী করায় জোর
এসএমই বাজার সম্প্রসারণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বেশি হারে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা ও সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ওপর জোর দেওয়া উচিত।
শনিবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘এসএমইদের রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধি : এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সেমিনারে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলাস এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, বাংলাদেশের এলসিডি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ২০২৬ সাল থেকে আমাদের এসএমইসহ রপ্তানিকারকদের পণ্য রপ্তানিতে অধিক শুল্ক প্রদান করতে হবে, যা ৮-১৬ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যেক্তাদের জিডিপিতে অবদান ২৮ শতাংশ এবং বেসরকারি খাত স্থানীয় কর্মসংস্থানের প্রায় ৯০ শতাংশের সুযোগ সৃষ্টি করে থাকে।
বিজ্ঞাপন
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের এসএমইরা ব্যবসা পরিচালনা, মূলধন স্বল্পতা, অবকাঠামো, প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও মানবসম্পদের স্বল্পতা, পণ্য রপ্তানিতে বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা এবং কমপ্লায়েন্সসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়ে থাকেন।
বাংলাদেশের এসএমইদের উন্নয়ন ও এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনে প্রশিক্ষণ প্রদান, ডাটাবেজ তৈরি, বাজার সম্প্রসারণে বহির্বিশ্বে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলা ও পণ্য প্রদর্শনীগুলোতে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ওপর জোরা দেন ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে, কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলাস বাণিজ্য সম্প্রসারণে সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরে জোরারোপ করেন। হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক, প্রযুক্তিগত ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণ, বাজার সম্প্রসারণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও বেশি হারে গবেষণা কার্যক্রম প্রয়োজন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেন, বাংলাদেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য। কারণ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারাই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে থাকে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের রয়েছে বহুমুখী ও শক্তিশালী রপ্তানিমুখী পণ্য সম্ভার এবং এ দেশের উৎপাদিত পাটজাতপণ্য, চিংড়ি, ওষুধ, তৈরি পোশাক প্রভৃতির বহির্বিশ্বে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের সময়ে শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতে আরও বেশি হারে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর তিনি জোরারোপ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সানেম’র নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে আমাদের এসএমই খাতের উদ্যোক্তারা প্রধানত সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, আর্থিক ও নীতি সহায়তা, যথাযথ অবকাঠামো এবং দক্ষ মানবসম্পদের স্বল্পতার মুখোমুখি হবেন। এ অবস্থায় কার্যকর দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, আর্থিক ও নীতি সহায়তা প্রদান, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী শ্রম আইনের সংশোধন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর, অবকাঠামো খাতের টেকসই উন্নয়নসহ নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বেঙ্গল মিট প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আসিফ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (এসএমই-এসপিডি) ড. মো. কবির আহমেদ অংশগ্রহণ করেন।
/আরএম/এসএসএইচ/