‘এইচ ফর হ্যান্ডওয়াশিং গেমস’ নামের অভিনব এক কর্মসূচি চালুর মাধ্যমে ‘বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস’ পালন করছে ইউনিলিভারের বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্যকর সাবানের ব্র্যান্ড লাইফবয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় নিত্যব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য (এফএমসিজি) উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) এবং বিশ্বের সর্ববৃহৎ বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

মহামারি-পরবর্তী স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় ‘এইচ ফর হ্যান্ডওয়াশিং গেমস’টি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে ইউবিএল, যেখানে খেলার মাধ্যমে শিশুদের কোমল মনকে উজ্জীবিত করে হাতের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি৪) অতিরিক্ত সচিব দিলীপ কুমার বণিক; বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাভেদ আখতার ও ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ। তারা স্কুল পরিদর্শন করে খেলাধুলা ও আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়ার সহজ অভ্যাস শেখানোর কার্যক্রমে অংশ নেন। চলতি বছর, লাইফবয় ও ব্র্যাক যৌথভাবে বাংলাদেশের ১,৫০০টি স্কুলে অংশগ্রহণমূলক ও আনন্দদায়ক উপায়ে শিশুদের হাত ধোয়ার অভ্যাস সম্পর্কে শেখাতে ৭ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে গেছে।

‘বিহেভিয়ার চেঞ্জ মডেল’ বা ‘অভ্যাস পরিবর্তন মডেল’ অনুসরণ করে ‘এইচ ফর হ্যান্ডওয়াশিং গেমস’ -এ কয়েক ধরনের খেলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সাপ ও মই এবং কাগজের ক্রিকেটের মতো জনপ্রিয় কিছু গেমস। এসব গেমস খেলার সময় সাবান দিয়ে হাত ধোয়া শেখা এবং তা অনুশীলন করার বিষয়টি সুকৌশলে শিশুদের নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করা হয়েছে।

অতিরিক্ত সচিব দিলীপ কুমার বণিক বলেন, দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সব ধরনের কাজই হাত দিয়ে করতে হয়, তাই হাতের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন জীবন নিশ্চিতে হাত ধোয়ার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশের জন্য স্কুল শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলোকে দূর করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এ সমস্যা মোকাবিলা করতে বহুদিন ধরে দেশের স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইউনিলিভার। 

ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাভেদ আখতার বলেন, বাংলাদেশের জন্য ‘ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন’ (ওয়াশ) -সম্পর্কিত রোগগুলো সবসময়ই প্রকট সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডায়রিয়ার কারণে শিশুমৃত্যু ব্যাপক হারে কমলেও, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যু হারের অন্যতম প্রধান কারণ এখনো ডায়রিয়া, প্রতি হাজারে যার সংখ্যা প্রায় ৬ জন। বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে হাতের স্বাস্থ্যবিধিতে সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। কারণ হাতের স্বাস্থ্যের গুরুত্ব ত্রিমাত্রিক : ‘জীবন বাঁচানো, অর্থ সাশ্রয় ও সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ’। বাংলাদেশে সর্বজনীন হাতের স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মানুষের টেকসই অনুশীলনের অভাব, যার কারণ হিসেবে ‘কার্যকর আচরণ পরিবর্তন পদ্ধতির অভাবের’ কথা বলা যায়।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, যখন আমরা মহামারি-পরবর্তী বিশ্বে বিভিন্ন জটিলতার মুখোমুখি হয়েছিলাম, তখন বিশেষ করে আমাদের শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য ও সুস্থতার মূল ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায় হাতের পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি। স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলা ও দৈনন্দিন জীবনে হাত ধোয়াকে উপভোগ্যভাবে ফিরিয়ে আনতে এ পদক্ষেপে লাইফবয়ের সঙ্গে অংশীদার হতে পেরে ব্র্যাক গর্বিত। সমাজের মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ক্ষমতায়িত করতে ‘এইচ ফর হ্যান্ডওয়াশিং গেমস’ ও ব্র্যাক একই উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে। এই সহযোগিতার মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়া বিষয়ে প্রশিক্ষিত ও অনুপ্রাণিত করাই আমাদের লক্ষ্য, যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য হাত ধোয়াকে সারা জীবনের একটি অভ্যাস হিসেবে তৈরি করে তুলবে।

দেশের শিশুদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ এবং আরও স্বাস্থ্যসম্মত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে বদ্ধপরিকর ইউবিএল ও ব্র্যাক।

জেডএস