রিটার্ন দাখিল সহজ ও হয়রানি বন্ধ হলে বাড়বে ব্যক্তিগত আয়কর
সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান খাত হচ্ছে আয়কর। কিন্তু আয়কর দেওয়ার সময় নানা ধরনের হয়রানি ও রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি সহজ না হওয়ায় প্রত্যাশা অনুযায়ী রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারছে না সরকার। রাজস্ব আয়ে এজন্য এক শ্রেণির করদাতার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে করের আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি এ খাতে হয়রানি বন্ধ ও রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি সহজ করা জরুরি।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত ব্যক্তিগত আয়কর প্রদান সংক্রান্ত এক কর্মশালায় এ কথা জানান ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও খাত সংশ্লিষ্টরা। দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই) এবং এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
সিসিসিআই প্রেসিডেন্ট ওমর হাজ্জাজের সভাপতিত্বে কর্মশালায় চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-৩ এর কর কমিশনার ড. ইখতিয়ারুদ্দিন মো. মামুন, চট্টগ্রাম ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নুর হোসেন, এম এম রহমান অ্যান্ড কোম্পানির সিনিয়র পার্টনার সিদ্ধার্থ বড়ুয়া, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস বাংলাদেশের সহসভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে তথ্যচিত্রের মাধ্যমে ব্যক্তিগত আয়কর প্রদান সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এসএমএসি আইটি লিমিটেডের পরিচালক স্নেহাশিষ বড়ুয়া।
চিটাগাং চেম্বারের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান খাত হচ্ছে আয়কর। কিন্তু আয়কর প্রদান বিষয়ে অনেকেই সচেতন নন। এক শ্রেণির করদাতার ওপর নির্ভর না করে ট্যাক্স নেট বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের মধ্যম আয়ের মানুষকে ট্যাক্স দিতে উৎসাহিত করতে হলে ট্যাক্সের হার সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি সাধারণ জনগণের মধ্যকার কর প্রদানের ভীতি দূর করার জন্য সব ধরনের হয়রানি বন্ধ এবং রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি সহজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-৩ এর কর কমিশনার ড. ইখতিয়ারুদ্দিন মো. মামুন বলেন, সরকার নতুন আয়কর আইনে ৪০টির বেশি সেবা প্রাপ্তির জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। আবার আইনে সরকারের কর্মচারীদের রিটার্ন দাখিলও বাধ্যতামূলক করেছে। নতুন আইনে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে কর অব্যাহতি ও কর রেয়াত সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবেন করদাতারা। তাই কর বিভাগে অটোমেশনের মাধ্যমে করদাতা এবং কর কর্তৃপক্ষের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক স্থাপনে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নভেম্বর মাসকে তথ্য এবং সেবা মাস উল্লেখ করে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ব্যক্তি শ্রেণি করদাতা ও অংশীদারি ফার্মগুলোকে স্বেচ্ছায় ও স্বপ্রণোদিত হয়ে রিটার্ন দাখিলের আহ্বান জানান তিনি।
কর্মশালায় ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্ন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সফটওয়্যার ট্যাক্সডুর মাধ্যমে ব্যক্তিগত আয়কর, হিসাব-নিকাশ ও রিটার্ন জমা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে ঘরে বসেও যেকোনো করদাতা আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ও সেবা পাবেন এবং রিটার্ন প্রস্তুত করতে পারবেন।
এসআই/কেএ