২৬ কোটি টাকার ঋণখেলাপি হাফিজ আহমেদ কারাগারে
হাফিজ আহমেদ। স্ত্রী সাইফুন্নাহার মোহনাকে চেয়ারম্যান বানিয়ে গড়ে তুলেছেন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ফাস্ট গ্রুপ। এরপর গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সৃষ্টি করেছেন বিভিন্ন কোম্পানি। মূলত আঠা ও রং পেন্সিল ব্যবসায়ী হাফিজ আহমেদ নতুন নতুন কোম্পানি খুলেছেন বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতের জন্য।
ফাস্ট কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড নামে কোম্পানি খুলে এনআরবিসি ব্যাংক থেকে নিয়েছেন ২৬ কোটি টাকার ঋণ। প্রথমদিকে কিস্তির টাকা পরিশোধ করলেও অল্পদিনে বেরিয়ে আসে আসল রূপ। ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি শুরু করেন। টাকা আদায়ে ব্যাংক তার বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে মামলা করে। সেই মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন হাফিজ আহমেদ।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে ফাস্ট গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন হাফিজ আহমেদ। ওই গ্রুপের মূল ব্যবসায় ছিল বিভিন্ন ধরনের আঠা উৎপাদন ও বিপণন করা। এরপর গড়ে তোলেন ফাস্ট কর্পোরেশন লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত ‘ফেবার-ক্যাসেল’ ও ‘আর্টলাইন’ ব্রান্ডের রং পেন্সিল, রাবার, বক্স ইত্যাদি স্টেশনারি উপকরণ বিক্রি করে। ২০১৪ সালে এনআরবিসি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা থেকে ওই কোম্পানির নামে ঋণ নেওয়া হয়। সুদে আসলে হাফিজ আহমেদের কাছে ব্যাংকের পাওনা ২৬ কোটি টাকা। সাধারণ ঋণ, মেয়াদি ঋণ, সিসি ঋণ, এলটিআর, লিজ ফাইন্যান্স হিসেবে এই ঋণ নেওয়া হয়। ঋণ গ্রহণের অল্পদিনের মধ্যেই পরিশোধ বন্ধ করে দেওয়ায় তিনি খেলাপি হয়ে যান। ব্যাংকের তদারকিতে পরবর্তীতে সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করবেন— এমন শর্তে ২০১৬ সালে পুনঃতফসিল সুবিধা গ্রহণ করেন। এরপর আবার খেলাপি হয়ে যান।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
ঋণের টাকা আদায়ে আইনি পদক্ষেপ হিসেবে তার বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে চারটি মামলা করে এনআরবিসি ব্যাংক। ৩১ আগস্ট একটি চেক ডিজঅনার মামলার বিপরীতে সমুদয় পাওনা পরিশোধের নির্দেশ এবং এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সেই আদেশের প্রেক্ষিতে ২৩ ডিসেম্বর হাফিজ আহমেদকে আটক করে ধানমন্ডি থানায় হস্তান্তর করে গোয়েন্দা পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
দেশের আরও ৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে তা ফেরত দিচ্ছেন না হাফিজ আহমেদ। এনআরবিসি ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, যারা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দিতে গড়িমসি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় ৩০ জন ঋণ খেলাপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন মহামান্য আদালত। দুজন কারাগারে আছেন। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দিতে যারা গড়িমসি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় ৩০ জন ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। দুজন কারাগারে আছেন। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
এসআই/এমজে