প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবে দেশের শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন সংগঠনটির সভাপতি আশরাফ আহমেদ।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এ বছর ঢাকা চেম্বার সিএমএসএমই, আমদানি বিকল্প শিল্পখাত, আর্থিক খাত, পুঁজিবাজার, ট্যাক্সেশন, বেসরকারি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক কূটনীতি, অবকাঠামো উন্নয়ন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, কর্মসংস্থান ও মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, এলডিসি উত্তরণ এবং স্মার্ট অর্থনীতিসহ প্রভৃতি বিষয়সমূহের উপর অধিক হারে গুরুত্বারোপ করবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফ আহমেদ বলেন, আমাদের অর্থনীতি বর্তমানে মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, খেলাপি ঋণ, পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীলতা, ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট এবং টাকার অবমূল্যায়নসহ প্রভৃতি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের এ ধরনের সমস্যাগুলো বেশ সফলতার সাথেই মোকাবেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং আশা করছি পূর্বের অভিজ্ঞতার আলোকে অর্থনীতির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাব।

জ্বালানি স্বল্পতা বিষয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবে শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ায় অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না। এ অবস্থায় বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ বিষয়ে আশরাফ বলেন, বেসরকারি খাতের পাশাপাশি সরকারি খাতও সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে এবং চলতি বছরে দেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গতিধারা ফিরিয়ে আনতে বেসরকারি খাতকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ভবিষ্যৎ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ও বিনিময় এবং ডিজিটাল কার্যক্রমে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি খুবই জরুরি। 

দেশের আমদানি বিকল্প শিল্পের উন্নয়নে সিএমএসএমইসহ উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তির সুবিধা সম্প্রসারণ এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কার্যক্রম বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।

তিনি আরও বলেন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, এক্সপোর্ট ফ্যাক্টরিং, আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় এবং রেমিট্যান্স আহরণে আরো প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এ ছাড়া, পুঁজিবাজারে লেনদেন অবকাঠামো (ট্রেডিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার) এবং অংশগ্রহণ বাড়াতে অলটারনেটিভ ট্রেড বোর্ড (এটিবি) ব্যবহার আরো বাড়াতে হবে।

ডিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, ট্যাক্স কোড ব্যবহারের মাধ্যমে একাউন্টিং ও রিপোর্টিং প্রক্রিয়ার মধ্যকার সমন্বয় আরও বাড়ানো প্রয়োজন। দেশের কৃষি, ঔষধ, ইলেকট্রনিক্স, হালকা প্রকৌশল, তথ্যপ্রযুক্তি এবং তৈরি পোশাক খাতসমূহে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য একটি সুনির্দিষ্ট দীর্ঘমেয়াদি খাতভিত্তিক জাতীয় বিনিয়োগ কর্মকৌশল প্রণয়ন করা জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ডিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।   

আরএম/এমজে