অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি মোরশেদ আলম, বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন এবং বেঙ্গল কনসেপ্ট অ্যান্ড হোল্ডিংয়ের এমডি সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রোববার (৪ মে) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক গোলাম মাওলা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোম্পানির এরিয়া অফিসের জন্য ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম তার ভাই মো. জসিম উদ্দিনের মালিকানাধীন জমি ক্রয়ে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট থাকা সত্ত্বেও তা গোপন করে অস্বাভাবিক দামে ক্রয়ের মাধ্যমে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬ হাজার ১৪৫ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানের রেকর্ডপত্রে দেখা যায়, ২০১৬ সালে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার বেগমগঞ্জ থানার আওতাধীন ২৩৯ নং গণিপুর মৌজায় মো. জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে ০.৮৯৬ অযুতাংশ জমি ও তার উপরিস্থিত নির্মাণাধীন ১৫তলা ভবনের ৪র্থ তলায় উত্তর পূর্ব কোণে ৬০০০ বর্গফুট আয়তনের বাণিজ্যিক ফ্লোর স্পেস ও ৫টি গাড়ি পার্কিং ক্রয় করে। ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড তৎকালীন চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম তার ভাই মো. জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে জমিসহ উক্ত ফ্লোর স্পেস ক্রয় করেন। মোরশেদ আলম পদমর্যাদা বলে এজেন্ট হিসাবে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সম্পত্তি বিনিয়োগের জিম্মাদার ছিলেন। বেঙ্গল কনসেপ্ট অ্যান্ড হোল্ডিং লিমিটেডের এমডি এবং মোরশেদ আলমের ছেলে মো. সাইফুল আলম জসিম উদ্দিনের পক্ষে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে দলিল সম্পাদন করে দেন।

যদিও জমি ক্রয়ের সময় বেঙ্গল কনসেপ্ট অ্যান্ড হোল্ডিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন মোরশেদ আলম, ডাইরেক্টর ছিলেন মো. জসিম উদ্দিন ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ছিলেন মোরশেদ আলমের ছেলে সাইফুল আলম। যারা কোম্পানির সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল মোহাম্মদ আবু নাসেরের সঙ্গে যোগসাজশে কোম্পানির জন্য জমি ক্রয়ে নিজেরা অবৈধ লাভে লাভবান হয়ে বাজারমূল্যের চেয়ে অস্বাভাবিক মূল্যে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অর্থ ব্যয় করেন। আসামিরা জালিয়াতির মাধ্যমে সাব রেজিস্ট্রার অফিসের জাল মূল্য নির্ধারণী প্রতিবেদন তৈরি করে আইডিআরএ এর অনুমোদন গ্রহণ করেন। ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি সম্পত্তির মূল্য বাবদ ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে আসামিরা নিজেরা লাভবান হতে জাল রেকর্ডপত্র তৈরি করে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬ হাজার ১৪৫ টাকা আত্মসাৎ করে ফৌজদারি অপরাধ করেছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৬০৭৯/৪২০/৪৬৭/৪৭১ ও ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জামাল মোহাম্মদ আবু নাসের মৃত্যুবরণ করায় তাকে আসামি করা হয়নি বলে জানা গেছে।

আরএম/এসএসএইচ