নগদের সিইও জালিয়াত, পদে থাকতে পারবে না : গভর্নর
আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে মো. সাফায়েত আলমকে জালিয়াত হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, অবশ্যই তিনি (নগদের সিইও) জালিয়াতি করেছেন। তিনি দোষী এবং তার এই পদ পাওয়ার কোনো অধিকার নেই এবং দায়িত্ব নিতে পারেন না।
রোববার (১৮ মে) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এক বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আহসান এইচ মনসুর। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ ব্যাংক যার নামে মামলা করেছে তাকেই আবার নগদের সিইও করা হয়েছে- সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে গভর্নর বলেন, সরকার তো সেটা মানবে না। এটা তো সরকারের পজিশন (অবস্থান) না। সরকারের পজিশন বাংলাদেশ ব্যাংক যেটা বলেছে সেটাই।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
তাহলে কি ডাক বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরোধ সৃষ্টি হবে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোনো বিরোধ হবে না। ডাক বিভাগ কেন বিরোধ করবে? এখন আর কোনো বিরোধ পাবেন না।
আপনাদের অবস্থান কী? এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, তার (সাফায়েত আলমের) কোনো অধিকার নেই সিইও পদে থাকার। আমাদের অবস্থান উনি দায়িত্ব নিতে পারেন না। অবশ্যই উনি জালিয়াতি করেছেন। অবশ্যই উনি দোষী এবং উনার এই পদ পাওয়ার কোনো অধিকার নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের যিনি আইনজীবী ছিলেন, তিনি শুনানির দিন উপস্থিত হননি। এর কারণ কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কারণ বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে জানানো হয়নি এবং এটা হাতে লিখে করা হয়েছে। অর্জিনাল যে রেকর্ড কোটে আছে এবং যেটা আমাদের দেওয়া হয়েছিল ও এজি অফিসকে দেওয়া হয়েছিল সেটা এক নয়। ওখানে হাতে লেখা আছে। যেটা আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে নেই এবং আমরাও পায়নি।
তাহলে কি তিনি নগদের সিইও থাকবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, তিনি একজন জালিয়াত। তিনি কীভাবে সিইও থাকেন? আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
এর আগে গতকাল শনিবার আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, নগদের আগের বোর্ডে যারা ছিলেন তারা বিপুল আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কোটি কোটি জনগণের সম্পৃক্ততা আছে এবং শত শত কোটি টাকার আমানত এখানে জড়িত, তাই বাংলাদেশ ব্যাংক সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেয়।
কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবীর অনুপস্থিতিতে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্তে আট সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এর ওপর ভিত্তি করে বেআইনিভাবে এমন একজনকে প্রতিষ্ঠানটির সিইও হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামি।
তিনি বলেন, নগদের আইটি বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুষ্কৃতিকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে এই মুহূর্তে কি হচ্ছে তা নিয়ে শঙ্কিত বাংলাদেশ ব্যাংক। বিগত সময়ের মতো অর্থ তছরুপ ও বেআইনি কর্মকাণ্ড হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১৯ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চে প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামিদের পুলিশ কেন খুঁজে পাচ্ছে না সে প্রশ্নও রাখেন মুখপাত্র।
এমএম/এআইএস