ব্যবসায়ীদের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করলেও এনবিআর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয় না। অথচ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি, অনিয়ম এবং অদক্ষতার নানান অভিযোগ রয়েছে। 

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) এনবিআর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্যা বিজনেস’ শীর্ষক সেমিনারে ব্যবসায়ীরা এসব অভিযোগ করেন।

সভায় শীর্ষ ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা অগ্রিম আয়কর (এআইটি) সমন্বয় না হওয়া, ছোট ব্যবসার জন্য উচ্চ টার্নওভার ট্যাক্সের হার এবং আমদানি-রপ্তানির সময় কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের হয়রানিসহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন।

চট্টগ্রাম থেকে আসা ব্যবসায়ী মাহাবুব চৌধুরী বলেন, আমরা চট্টগ্রামে প্রায় এসআইকুডার সার্ভার সমস্যার মুখোমুখি হই। এর সমাধান দরকার। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সহ-সভাপতি নাসির খান বলেন, পলাতক চেয়ারম্যানের এসআরও দিয়ে বন্ড সিস্টেম চলছে। এটাকে বন্ধ করতে হবে। লেদার সেক্টর বসে গেছে। আমদানি-রপ্তানিকারকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করে। পরে হাইকোর্ট থেকে মুক্তি পায়। মুক্তি পেলেও যে কর্মকর্তা মিথ্যা মামলা করলো তার কোনো শাস্তি হয় না। অথচ মিথ্যা মামলায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা উচিত। সেটা হয় না।

যশোর চেম্বারের নেতা মাহাবুব রশীদ জুয়েল বলেন, বেনাপোল ও মোংলা বন্দর। বেনাপোল বন্দের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি।

বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান অভিযোগ করে বলেন, সারাদেশে ৪ লাখ ৮২ হাজার রেস্তোরাঁ রয়েছে। সত্যিকার যদি কাজ করতে চান, তাহলে ভ্যাট খাতের দিকে নজর দিতে হবে। আপনার লোকেরা চাঁদাবাজি ও হয়রানি করে। যথাযথভাবে ভ্যাট আদায় হচ্ছে না। যা আদায় হয় তার মাত্র ২০ শতাংশ পায় সরকার। আর ৮০ শতাংশ যায় এনবিআর কর্তা ও ব্যবসায়ীদের একটি অংশের পকেটে।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান ব্যবসায়ীদের অভিযোগের জবাবে এসব সমস্যার কথা স্বীকার করেন এবং প্রয়োজনীয় নিয়ম পরিবর্তনের আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম আশা করে কেউ বৈষম্যের শিকার হবে না। ব্যবসায়ীরা তাদের কষ্টার্জিত আয়ের একটি অংশ কর হিসেবে দিচ্ছেন, কিন্তু তারা মনে করেন এর বিনিময়ে যথাযথ সেবা বা সুবিধা পাচ্ছেন না।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বিকেএমইএ’র একটি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, এইচএস কোডের অসঙ্গতির কারণে এক রপ্তানিকারক বন্ডেড পণ্য ছাড়তে সমস্যায় পড়েছিলেন। আমরা নির্দেশ দিয়েছি ভুল থাকলেও পণ্য ছেড়ে দিতে। পরে তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।

ব্যবসায়ীদের কেবল কর মওকুফের জন্য ব্যবসা পরিচালনা না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কর মওকুফের ক্ষেত্রে আমাদের হিসাব করতে হবে দেশের এবং মানুষের উপকার কতটুকু হচ্ছে, ব্যক্তিগত লাভের জন্য নয়। প্রাথমিকভাবে ভ্যাট ছিল একটি যৌক্তিক ও বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা।

আরএম/বিআরইউ