জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেছে সরকার।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে দুই ভাগ করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ করার উদ্দেশ্য সুপারিশ অনুযায়ী যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি বলে সংস্কার কমিটির সদস্য ফরিদ উদ্দিনের অভিযোগের পরদিন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ (পিইবি) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে ওই মন্তব্য করেন ফরিদ উদ্দিন। পরদিন পরামর্শক কমিটির কার্যক্রম সমাপ্তের এমন প্রজ্ঞাপন নতুন করে প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব বিভীষন কান্তি দাশ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের বলা হয়েছে, ‘রাজস্ব নীতি এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পৃথকীকরণের লক্ষ্যে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করায় অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ৯ অক্টোবর ২০২৪ সালে গঠিত জাতীয় রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির কার্যক্রম সমাপ্ত করা হলো।’

পরামর্শক কমিটির সদস্য ও এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন রাউন্ড টেবিল আলোচনায় বলেন, এনবিআরকে দুই ভাগ করে আলাদা দুটি বিভাগ গঠনের প্রক্রিয়ায় যদি ‘বিদ্বেষ’ থেকে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে তা জাতির জন্য ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এনবিআরকে দুই ভাগ করা হয়নি, বরং যেভাবে অধ্যাদেশ জারি হয়েছে তা তাদের সুপারিশের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

গত বছরের অক্টোবর মাসে গঠিত পাঁচ সদস্যের পরামর্শক কমিটি এনবিআরের সংস্কার প্রস্তাব এবং রাজস্ব নীতি ও প্রশাসন সংস্কারের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান করে আসছিল। আর চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া প্রকাশিত হয়।

এরপর থেকে আয়কর ও কাস্টমসসহ এনবিআরের সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওই অধ্যাদেশ বাতিল করার জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন। তাদের পক্ষ থেকে প্রধান ৭ দফা সুপারিশ করা হয়েছিল। এরপর গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা– এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করা হয়। মে মাসে প্রায় ১৪ দিন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পরে সরকারের আশ্বাসে বাজেট পেশ হওয়ার আগে কর্মসূচি প্রত্যাহার হয়। ফের একই দাবিতে জুন মাসের শেষ সপ্তাহে কর্মসূচি পালন করা হয়। গত ২৯ জুন ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

আর গত ১ সেপ্টেম্বর রাজস্বনীতি বিভাগের সচিব ও অন্যান্য পদে নিয়োগসহ আগের অধ্যাদেশটি থেকে ১১টি সংশোধন এনে রাজস্ব খাতের সংস্কারের সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

আরএম/এসএসএইচ