বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেছেন, গ্যাসের দামের প্রশ্নে সবদিক বিবেচনা করে ভারসাম্য রক্ষা করা হবে। দাম বেড়ে গেলে সারের উৎপাদন খরচ নিয়ে আপনারা চিন্তিত—অবশ্যই কৃষিকে বিবেচনায় নিতে হবে। জিডিপিতে কৃষির অবদান কম হলেও খাদ্য নিরাপত্তা এবং বিশাল কর্মসংস্থানের বিষয়টি অবশ্যই ভাবনায় রাখতে হবে। তবে একই সঙ্গে এলএনজি আমদানির খরচের বিষয়গুলোও বিবেচনায় আনতে হবে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) বিয়াম ল্যাবরেটরিতে বিইআরসি আয়োজিত সার উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বৃদ্ধির জন্য পেট্রোবাংলাসহ গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

শুনানির শুরুতে তিনি বলেন, গণশুনানি একটি আইনি প্রক্রিয়া। এর ন্যায্যতা প্রমাণের দায়িত্ব প্রস্তাবকারীর। আবার কেউ ভিন্নতা প্রস্তাব করলে সেটির যৌক্তিকতা প্রমাণের দায়িত্ব ভিন্নমত পোষণকারীর। কমিশন যুক্তির যথার্থতা যাচাই করে আদেশ চূড়ান্ত করবে।

পেট্রোবাংলার প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দাম বাড়ানো হলে বাড়তি ৭ কার্গো এলএনজি আমদানি করে সারে সরবরাহ করা হবে। ৬ মাস (অক্টোবর-মার্চ) পুরোমাত্রায় (২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হবে। অবশিষ্ট ৬ মাসের মধ্যে এপ্রিল-মে ১৬৫ মিলিয়ন হারে, জুনে ১৭৫ মিলিয়ন এবং জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৩০ মিলিয়ন হারে গ্যাস সরবরাহ দেবে। শনিবার (৩ অক্টোবর) সার উৎপাদনে ৯২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হয়েছে।

শুনানি শেষে বিসিআইসির পরিচালক (পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন) দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন, ২০২২ সালে একইভাবে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর কথা বলে ৪.৪৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬ টাকা করা হয়, কিন্তু নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ পাওয়া যায়নি, বরং অনেকখানি কমেছে সরবরাহ। তবে যদি পুরোমাত্রায় গ্যাস দেওয়া হয় তাহলে ২০ লাখ টনের উপরে সার উৎপাদন করা সম্ভব। আর ২০ লাখ টন সার উৎপাদন করা গেলে গ্যাস ৩০ টাকা হলেও আমদানির তুলনায় কম দাম পড়বে।

তিনি বলেন, গ্যাসের দাম যদি ৩০ টাকা হয়, আর যদি ২০ লাখ টন উৎপাদন করতে পারি, তাহলে কেজি প্রতি সারের উৎপাদন খরচ পড়বে ৪৬ টাকার মতো। সেখানে আমদানিতে ৬১ টাকার মতো ব্যয় হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ট্রেড গ্যাপ (ভর্তুকি) সুরাহা না করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে সার কারখানাগুলো তীব্র আর্থিক সংকটে পড়বে। গ্যাস বিল পরিশোধে বিলম্বসহ সারের উৎপাদন হুমকির মুখে পড়তে পারে। গ্যাসের মিশ্রিত দর ২৮ টাকার নিচে হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ওএফএ/এমজে