এক থেকে দুইদিনে পণ্য ছাড়, ডেমারেজ সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে
একদিন থেকে দুদিনের মধ্যে শুল্ক স্টেশন থেকে পণ্য ছাড়তে হবে, সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের ডেমারেজ করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
বুধবার (৮ অক্টোবর) এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে মিট দ্যা বিজনেস শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যবসায়ী নূরুল কবীরের উপস্থাপনায় এনবিআর চেয়ারম্যানসহ বোর্ড সদস্যরা ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রশ্ন ও অভিযোগের জবাব দেন অনুষ্ঠানে।
বিজ্ঞাপন
আমদানির ক্ষেত্রে পণ্য দ্রুত খালাসের তাগিদ দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য একদিন-দুইদিনের মধ্যে পণ্য ছাড় করা। মালামাল আসার পর অ্যাসেসমেন্ট কমিটি করলে পণ্যের ডেমারেজ দিতে হয়। এভাবে পণ্য ছাড় করলে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারবে না। যদি কমিটি করতেই হয়, তাহলে মাল আসার আগে করতে হবে। যেমন— বাবা মারা গেছে, ছেলেরা সম্পদ ভাগ করে বাবার লাশ দাফন করবে, এটা হবে না।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, যারা বিজনেস করতে আসছে, তারা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন। সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল কাজ। কোনো আলোচনা করার দরকার হলে তা দ্রুত সম্ভব সমাধান করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
এই প্রেক্ষাপটে চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, মাঠপর্যায়ের কোনো কর্মকর্তারা কোনো অনৈতিক কাজ করতে চাইলে কিংবা হয়রানি করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে অনলাইনে অভিযোগ দেবেন। এনবিআর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণের টাকায় সরকারি কর্মচারীদের বেতন হয়। কেন হয়রানি মেনে নিবেন? ব্যবসা বাড়লে রাজস্ব বাড়বে। ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করাই প্রধান ফোকাস।
পণ্যের ভ্যালুয়েশন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ভ্যালুয়েশন নিয়ে এত জটিলতা কেন? এনবিআর যা ন্যায্য, সেটাই নেবে। ভ্যালুয়েশন বাড়িয়ে কাস্টমস ডিউটি ধরার দরকার নেই। তবে কর ফাঁকি দিলে ধরতে হবে। সমস্যা হচ্ছে আমাদের এখানে মাথা বেশি, ফলে কাজের গতি পাচ্ছে না।
দারাজের এক প্রতিনিধি অভিযোগ করে বলেন, ই-কমার্স খাতে পণ্য বিক্রির ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য। কিন্তু, একই পণ্য অফলাইনে বিক্রি করলে ভ্যাট দিতে হয় সাড়ে ৭ শতাংশ । যেমন- মোবাইলের ক্ষেত্রে দোকানে বিক্রির ওপর ভ্যাট ৭.৫ শতাংশ কিন্তু অনলাইনে ১৫ শতাংশ। এটা সমন্বয় করতে হবে। ব্যবসা খাতে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকা উচিত। এক্ষেত্রে এনবিআর চেয়ারম্যান কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন।
টার্নওভার কমিয়েও ভ্যাট রেজিষ্ট্রেশন বৃদ্ধি করতে পারিনি উল্লেখ করে আবদুর রহমান বলেন, টার্নওভার ৩ কোটি টাকা থেকে ৫০ লাখ করার পরও ভ্যাট রেজিষ্ট্রেশন বাড়েনি। টার্নওভার কমানোর পরও রেজিষ্ট্রেশন বাড়েনি। এখন মাত্র ৬ লাখের কিছু বেশি।
আরএম/এমজে