পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে লেনদেন শুরু করেছে ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির লেনদেনের প্রথম দিন বুধবার (১৬ নভেম্বর) থেকে শেয়ার মূল্যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ওইদিন কোম্পানিটির শেয়ার ফেসভ্যালু বা অভিহিত মূল্যের চেয়ে কম দামে লেনদেন হয়েছে।
 
লেনদেনের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবারও (১৭ নভেম্বর) ১০ টাকা ফেসভ্যালুর শেয়ার ৯ টাকায় লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে কোম্পানিটি। 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজারে কোনো কোম্পানির শেয়ার লেনদেন শুরুর প্রথমদিন থেকেই স্বাভাবিকভাবে দ্বিগুণ, তিনগুণ দামে লেনদেন হয়। কিন্তু বিপর্যয় দেখা দিল কেবল গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের লেনদেনের ক্ষেত্রে। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শুরু দিন বুধবার ৯ টাকায় লেনদেন হয়েছে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনও লেনদেন হয়েছে ৯ টাকায়।

ডিএসইর তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ২ কোটি ১০ লাখ ২৮ হাজার ৩৮০টি শেয়ার সর্বোচ্চ ৯ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৯ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে। তাতে দিন শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ৯৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। 

এ বিষয়ে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মনজুর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শেয়ারের দাম ফেসভ্যালুর নিচে লেনদেন হয়েছে। এখানে কোম্পানির কী করার আছে। শেয়ারের দাম বাড়বে না কমবে এটা নির্ভর করে বিনিয়োগকারীদের ওপর। আমরা দাম কমাতে কিংবা বাড়াতে পারি না।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের মৌলভিত্তি ভালো বলে দাবি করেন কোম্পানি সচিব।

২০১৩ সালে দেশে যাত্রা শুরু করে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। শুরুতে এই প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা নিজাম চৌধুরী। ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মাইমুনা খানম। 

পরিচালক হিসেবে রয়েছেন-মোহাম্মদ ফারুক, শহিদুল আলম, শাহান ফেরদাউস, আরিফ আহমেদ, মোহাম্মদ মোস্তান বিল্লাহ আদিল, বোরহানুল হাসান চৌধুরী, ওয়াহিদুল আলম সেথ, রোকেয়া ইয়াসমিন, সুব্রত কুমার ভৌমিক, ফারজানা বেগম, মোহাম্মদ ওয়াহিদুল আলম, মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া এবং হাসান মনসুর। স্বতন্ত্র পরিচালক হিসাবে রয়েছেন-মোহাম্মদ কুতুবুবদৌলা, এএএম সলিমুল্লাহ, ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, আহমেদ মোক্তাদির আরিফ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হাবিব হাসনাত।

আইপিওর মাধ্যমে ৪২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে ব্যাংকটি। কোম্পানির প্রসপেক্টাস (তথ্য বিবরণী) অনুসারে এ মূলধনের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (এসএমই) বিনিয়োগ হবে। ২৬৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে সরকারি সিকিউরিটিজ অথবা বন্ডে। ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে পুঁজিবাজারে। 

এছাড়া আইপিও’র খরচ ৬ কোটি টাকার কিছু বেশি। পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের পর ব্যাংকের বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ৯৪০ কোটি টাকা। এরমধ্যে উদ্যোক্তাদের শেয়ার ৪৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ৩১ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ। পরিশোধিত মূলধনের দিক থেকে ব্যাংকটির আকার অনেক বড়। 

এমআই/জেডএস