গ্রাহকের ৭ কোটি টাকা সরিয়েছে মডার্ন সিকিউরিটিজ
বানকো, ক্রেস্ট ও তামহা সিকিউরিটিজের পর এবার গ্রাহকের টাকা সরিয়েছে মডার্ন সিকিউরিটিজ লিমিটেড। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪০৬ টাকা সরিয়েছে। ডিএসইর পরিদর্শন টিম তার প্রমাণ পেয়েছে।
ডিএসই এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) পাঠিয়েছে। এছাড়াও ডিএসইর পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটির এমডি খুঁজিস্তা নূর-ই-নাহরীনকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে গ্রাহকের টাকা কাস্টমার অ্যাকাউন্টে ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ডিএসইর মনিটরিং অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগের প্রধান ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম ভূইয়া স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর একটি দল মডার্ন সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্রোকারেজ হাউস পরিদর্শন করেছে।
প্রতিনিধি দল প্রমাণ পেয়েছে যে মডার্ন সিকিউরিটিজের ‘কনসুলেটেড কাস্টমার’ অ্যাকাউন্টে গ্রাহকদের টাকার থাকার কথা ছিল ১০ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার ১৯২ টাকা। এর মধ্যে ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪০৬ টাকার কোনো হদিস নেই। যা ডিএসইর স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি বিধিমালা ২০০০ এর ৬ (১)(২) লঙ্ঘন। গ্রাহকদের সুরক্ষার জন্য মডার্ন সিকিউরিটিজকে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে গ্রাহকের টাকা সমন্বয়ের নির্দেশনা দিয়েছে ডিএসই।
বিজ্ঞাপন
একইসঙ্গে কেন এই কনসুলেটেড কাস্টমার অ্যাকাউন্টে টাকা নেই তার জবাব দিতে তিন কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। তবে মডার্ন সিকিউরিটিজ সাত কর্মদিবস সময় চেয়েছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে এক ডিএসইর পরিচালক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই অ্যাকাউন্টটি সম্পূর্ণ বিনিয়োগকারীদের টাকার। এ খাতে টাকা নেই মানেই, এই টাকা মিস-মেচ হয়েছে। এই টাকা অন্য কোনো না কোনো কাজে ব্যবহার করেছে।
তিনি বলেন, এই টাকা খুঁজে বের করতে হবে। গ্রাহকদের টাকা ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো বিস্তারিতভাবে দেখতে হবে। সবার পোটফলিও দেখতে হবে। সর্বোপরি ব্যবসা করতে হলে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে হবে মডার্ন সিকিউরিটিজকে।
বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, স্টক ব্রোকার হাউসগুলোর সাধারণত দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকে। এর মধ্যে একটি ব্রোকার হাউসের মালিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। আরেকটি হলো বিনিয়োগকারীদের সমন্বিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, যার নাম কনসুলেটেড কাস্টমার অ্যাকাউন্ট। এই অ্যাকাউন্ট কেবল গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত টাকা জমা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করবে।
এ বিষয়ে মডার্ন সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খুঁজিস্তা নূর-ই-নাহরীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, অসুস্থতার কারণে ঠিক মতো অফিস করতে পারিনি। আজ অফিসে যাচ্ছি বিষয়টি দেখছি। আমার মনে হচ্ছে অবশ্যই হিসাবে গোলমাল হয়েছে। তা না হলে সাত কোটি টাকা মাইনাস হওয়ার কথা নয়।
তিনি বলেন, আমার হাউজের গ্রাহকগুলো ছোট ছোট। ধরেন, হাউসে একজন বিনিয়োগকারীর ২০ হাজার টাকা রয়েছে। হয় তো শেয়ার কেনার সময় তিনি ২১ হাজার কিংবা ২২ হাজার টাকার অর্ডার দিয়েছেন। কিংবা আজ চেক জমা দিয়েছেন, সেই চেকের টাকার জমা হয়নি। কিন্তু গ্রাহকদের শেয়ার কেনা হয়েছে। এমন কিছু থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এক মাস আগেও ডিএসই আমার হাউস পরিদর্শন করেছে, সেখানে কিছু পায়নি। এখন হঠাৎ করে সাত কোটি টাকা নেগেটিভ পেয়েছে, এটা সম্ভব না। হিসাবে গোলমাল হয়েছে। আবার পরিদর্শন করলেই সঠিক চিত্র উঠে আসবে।
এমআই/এমএইচএস