নতুন এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) আবেদন প্রক্রিয়ায় নিয়ম লঙ্ঘন ও অনিয়মের অভিযোগে দেশের পাঁচটি মাদ্রাসার প্রধানদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।

অভিযোগে বলা হয়েছে, যথাযথ শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানরা একাধিকবার এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন এবং কিছু ক্ষেত্রে জালিয়াতির আশ্রয়ও নিয়েছেন।

সোমবার (২৭ মে) মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অর্থ) মো. শরিফুল ইসলামের সই করা পৃথক নোটিশে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

নোটিশে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার চকশালাইপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, সহকারী শিক্ষক (বাংলা) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত গোবিন্দ চন্দ্র সরকারের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তিনি ২০২৪ সালের নভেম্বর ও ২০২৫ সালের মে মাসে দুইবার নতুন এমপিও আবেদন করেছেন। অথচ নীতিমালার স্পষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী, অযোগ্য ব্যক্তির এমপিও আবেদন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

অন্যদিকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার আউলিয়ারহাট কাজী নিজামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো. আছাদুজ্জামানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। তিনি পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদের পরীক্ষায় ডিজি প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতে নিয়োগের ফল ডিজির স্বাক্ষর জাল করে এমপিও আবেদন করেছেন। এতেও নির্ধারিত প্রক্রিয়া ও কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দেওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে মাদ্রাসা অধিদপ্তর।

এ ছাড়া রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. গোফরান আলী ওয়াহেদীও সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ছয়বার নতুন এমপিও আবেদন করেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত শুরু হয়।

একই ধরনের অনিয়ম করেছেন খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বেজপাড়া হায়াতুন্নেচ্ছা দাখিল মাদ্রাসার সুপার এ কে এম আজহারুল ইসলামও। তিনি সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে মো. নাহিদুজ্জামানকে এমপিওভুক্ত করার জন্য ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে চারবার আবেদন করেন, যার প্রতিটিতেই নিয়োগকালীন শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘাটতি ছিল।

এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা’ অনুযায়ী ১৮.১ (গ) ও (ঙ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত বিধান অনুসারে তাদের এমপিও সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী ১৬ জুনের মধ্যে সন্তোষজনক লিখিত ব্যাখ্যা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

এসব নোটিশের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, মাদ্রাসা সভাপতি ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছেও।

আরএইচটি/এসএসএইচ