আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চেয়েও পাওয়া যায়নি: সিটি ইউনিভার্সিটি প্রোভিসি
সিটি ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য (প্রোভিসি) প্রফেসর ড. কাজী শাহদাত কবির অভিযোগ করেছেন, ৪ ঘণ্টা ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর চললেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। বারবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। আর পরে পুলিশ এলেও ঘটনাস্থলে আসেননি। তারা দূরে দাঁড়িয়েছিল।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক সহিংসতা ও ভাঙচুরের বিষয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা অত্যন্ত ভয়াবহ। চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সিস্টেমেটিকভাবে লুটপাট হয়েছে। সব কম্পিউটার, ল্যাপটপ, চেয়ার— কিছুই অবশিষ্ট নেই। বিল্ডিংয়ে আগুন দেওয়া হয়নি, তবে ভেতরে ঢুকে সব লুটপাট করেছে তারা।
বিজ্ঞাপন
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা শুরু থেকেই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু তারা সময়মতো আসেনি। পরে জানায় যে হাই কমান্ড থেকে অনুমতি না পাওয়ায় সেনাবাহিনীও আসতে পারেনি। এই দীর্ঘ চার ঘণ্টায় আমরা একা পড়েছিলাম।
উপ-উপাচার্য বলেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ক্লাসের অবস্থা নেই। চলমান পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা আসলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখিনি। আমাদের বুধ ও বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ছুটি। তবে শুক্রবার থেকেই অনলাইন ক্লাস চালু হবে। সেমিস্টার পিছিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, কারণ শিক্ষার্থীরাও তা চায় না।
বিজ্ঞাপন
প্রফেসর শাহদাত কবির আরও বলেন, তাত্ত্বিক (থিওরি) ক্লাসগুলো অনলাইনে নেওয়া হবে। তবে কিছু প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস এবং পরীক্ষা অফলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধাপে ধাপে সরাসরি ক্লাস ও প্র্যাকটিক্যাল নেওয়া হবে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত অনলাইন কার্যক্রম শুরু করতে, যেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষতি না হয়। তবে এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম থেমে থাকবে না।
এর আগে, রোববার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর সিটি ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামান্য একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
জানা যায়, সিটি ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষার্থী ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’-এর পাশে বসে ছিলেন। এ সময় এক শিক্ষার্থীর অসতর্কভাবে থুতু মোটরসাইকেলে যাওয়া ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর গায়ে লাগলে কথা-কাটাকাটির সৃষ্টি হয়।
পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশি অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং উভয়পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সিটি ইউনিভার্সিটি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধানের চেষ্টা চালায়। তবে একপর্যায়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেয় এবং আরও কয়েকটি গাড়ি ও প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর চালায়।
আরএইচটি/জেডএস