শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ল ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত
প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (কওমি ছাড়া) চলমান ছুটি আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে ফের ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি হয়তো এটিই শেষ। এরপর ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারে সরকার।
গত বুধবার ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনার এখন যে পরিস্থিতি এটা যদি বিদ্যমান থাকে তাহলে হয়তো ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে পারব। সেক্ষেত্রে প্রথমেই দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে সব কিছু নির্ভর করবে করোনা পরিস্থিতির উপর।
বিজ্ঞাপন
এর আগে সংসদে ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানালেও কবে খোলা হবে তা স্পষ্ট করেনি শিক্ষামন্ত্রী। সংসদে মন্ত্রী বলেন, এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও সবাইকে প্রতিদিন ক্লাসে আসতে হবে না। দশম ও দ্বাদশ শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন অন্যান্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একদিন স্কুলে আসতে হবে। সেজন্য ৪ ফেব্রুয়ারির পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশ পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
এদিকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ বা দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রাথমিক স্কুল খুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। প্রাথমিক স্কুল খোলার ক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মঙ্গলবার ( ২৬ জানুয়ারি) তার নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
জানা গেছে, দেশের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরযুক্ত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খোলার জন্য প্রস্তুত কি-না, আর প্রস্তুত না হলে কেন তা জানতে চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। গত ২২ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি গাইডলাইন সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে।
এটি বাস্তবায়নে সকল আঞ্চলিক পরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা কি নিজ অঞ্চল, জেলা এবং উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি-না তা পরিবীক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত করে ই-মেইলের মাধ্যমে জানাতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) মাউশির মনিটরিং এন্ড ইভ্যালুয়েশন উইংয়ের সহকারী পরিচালক মোহছেনা বেগম স্বাক্ষরিত এক স্মারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এটি সকল আঞ্চলিক পরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ২২ জানুয়ারি এক নোটিশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খোলার জন্য গাইডলাইন অনুযায়ী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গ্রহণ করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছিল মাউশি। নোটিশটিতে সই করেছিলেন মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।
এর এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার ওই নোটিশে বলা হয়, দেশের সকল মাধ্যমিক, প্রদত্ত গাইডলাইন যথাযথ অনুসরণ করে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত, নিরাপদ ও আনন্দময় প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত কাছে কি-না তা পরিবীক্ষণ করা প্রয়োজন।
গত ৮ মার্চ ২০২০ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর গত ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর ৩০ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ছুটি ছিল, সে ছুটি এবার ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত বাড়ল। ছুটি চলাকালে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এনএম/এমএইচএস