কলকাতার নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠানের পর থেকেই অসুস্থ বোধ করছিলেন বলিউডের কালজয়ী সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ তথা কেকে। হোটেলে ফিরে লিফটে উঠে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। পরে হোটেলে নিজের রুমে ঢুকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। আর হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই সব শেষ।

কেকের এ ভাবে, অসময়ে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না তার গানের ভক্তরা।

কেকের মৃত্যুর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর প্রকাশ্যে এসেছে একটি সিসিটিভি ফুটেজ। তাতে দেখা যাচ্ছে, হোটেলের লবিতে হেঁটে যাচ্ছেন কেকে। মনে করা হচ্ছে, লিফট থেকে নেমে ওই লবি দিয়ে হেঁটেই ঘরে পৌঁছান শিল্পী। 

লিফটে ওঠার পর একটি ছবিতে দেখা যায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন কেকে। তবে কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকার ওই হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজে অবশ্য কেকে’কে দেখে অসুস্থ মনে হয়নি। বরং স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতে হাঁটতেই চলে যেতে দেখা যাচ্ছে তাকে। তখন পাশে ছিলেন তার ম্যানেজার হিতেশ ভাট। কেকের পরনে ছিল অনুষ্ঠানেরই পোশাক, গলায় একটি সাদা তোয়ালে। যে তোয়ালে দিয়ে অনুষ্ঠানে বার বার ঘাম মুছতে দেখা গিয়েছে তাকে। হিতেশের সঙ্গে গল্প করতে করতেই লবি দিয়ে সোজা হেঁটে ঘরের দিকে চলে যান তিনি।

কেকের ম্যানেজার হিতেশ জানিয়েছেন, নিজের ঘরে ঢুকেই একটি সোফায় বসতে গিয়ে পড়ে যান কেকে। তখন টেবিলের কোনায় মাথা ঠুকে কেটে যায়। হিতেশ চিৎকার করে হোটেলের কর্মীদের ডাকাডাকি শুরু করেন। ততক্ষণে অচেতন হয়ে পড়েছেন কেকে। হোটেলকর্মীরা চিকিৎসককে ফোন করেন। চিকিৎসক বিপদ বুঝে কেকে’কে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। অত কম সময়ের মধ্যে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা না হওয়ায় হোটেলের গাড়িতে তুলেই একবালপুর রওনা হতে হয়। কিন্তু যাত্রাপথেই সব শেষ।

উল্লেখ্য, কলকাতার নজরুল মঞ্চে গুরুদাস কলেজ আয়োজিত কনসার্টে পরপর দু’দিন সংগীত পরিবেশন করেছিলেন কেকে। দ্বিতীয় দিন (৩১ মে) অডিটোরিয়ামে বিপুল দর্শক সমাগম হয়। ধারণক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণ দর্শক প্রবেশ করেছিল। অন্যদিকে সেখানকার শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও ছিল বন্ধ।

যার কারণে মাত্রাতিরিক্ত তাপ সহ্য করতে হয়েছিল কেকে’কে। তিনি স্পটলাইট বন্ধ করার কথাও বলেছিলেন। এছাড়া বারবার রুমাল দিয়ে ঘাম মুছছিলেন। এক পর্যায়ে আর টিকতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কনসার্ট ত্যাগ করে হোটেলে চলে যান। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।

বুধবার (১ জুন) কলকাতায় কেকে’কে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও। এরপর গায়কের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে মুম্বাইতে। সেখানেই তার শেষকৃত্য হবে।

সূত্র : আনন্দবাজার

আইএসএইচ