ফরিদুর রেজা সাগর

শিশুসাহিত্যিক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগরের জন্মদিন আজ। ১৯৫৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনার পাশাপাশি তার লেখা বেশ কিছু নাটকও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে। প্রায় সারা জীবনই তিনি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে তিনি ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড, চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি লেখালেখিও করছেন নিয়মিত।

২০১৬ সালে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে একুশে পদক পান ফরিদুর রেজা সাগর। শিশুসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৪ সালে। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র প্রযোজনার জন্য ৮ বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারে এ পর্যস্ত সাতবার শ্রেষ্ঠ প্রযোজক হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন।

তার প্রযোজিত চলচ্চিত্রগুলো এ পর্যন্ত ২০০টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছে। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জন্য বাচসাস-সহ বিভিন্ন সংগঠন তাকে পুরস্কারে ভুষিত করেছে। শিশু সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি আরও পেয়েছেন অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, রোমেনা আফাজ স্মৃতি স্বর্ণ পদক, টেনাশিনাস পদক, ইউরো শিশুসাহিত্য পুরস্কার ও দাদাভাই শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৯। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র প্রযোজনার জন্য বিদেশেও নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।

প্রায় শতাধিক গ্রন্থের লেখক ফরিদুর রেজা সাগরের ‘ছোট কাকু সিরিজ’ ছোট বড় সকলের কাছে সমান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ পর্যন্ত ৩০টিরও বেশি ছোটকাকু সিরিজের বই প্রকাশিত হয়েছে। বড়দের জন্যও লিখেছেন নানা বই। ভ্রমণ বিষয়ক গ্রন্থ ’ভ্রমণ ভ্রমিয়া শেষে‘ ছাড়াও বাংলাদেশের টেলিভিশন ব্যবস্থা নিয়ে তথ্যভিত্তিক স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ ‘একজীবনে টেলিভিশন’, ‘টেলিভিশন জীবনের সঙ্গী’ ও ‘আরেক জীবনে টেলিভিশন’ বইগুলো ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।

তার লেখা ‘এক জীবনে টেলিভিশন’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তার লেখা গল্প ‘অমি ও আইসক্রিমঅলা’ ৬ষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। তার কিশোরসমগ্র গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তেরটি। প্রায় দেড় শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে খ্যাতনামা প্রকাশনা থেকে।

সাগরের পিতা মরহুম ফজলুল হক ছিলেন দেশের চলচ্চিত্র নির্মাণ ও সাংবাদিকতার পথিকৃৎ। মা রাবেয়া খাতুন ছিলেন প্রথিতযশা কথাসাহিত্যিক। ফরিদুর রেজা সাগর বাংলা একাডেমির একজন ফেলো, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের স্থাপনা সদস্য। ছোটবেলা থেকে কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা এবং বর্তমানে বিভিন্ন শিশু সংগঠন ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, এসব সংগঠনের তিনি চ্যারিটি মেম্বার। তার স্ত্রী কনা রেজা। দুই কন্যা মেঘনা ও মোহনা। একজন চিকিৎসক, অন্যজন স্থপতি। 

আরআইজে