মৃত্যুর ৪১ বছর পর ‘গিটার জাদুকর নয়ন হক মুন্সী’
বাংলাদেশের গিটার জাদুকর নয়ন হক মুন্সী। মৃত্যুর ৪১ বছর পর গত ৮ অক্টোবর মুক্তি পেয়েছে তার ঐতিহাসিক অপ্রকাশিত অ্যালবামটি। যার শিরোনাম ‘গিটার জাদুকর নয়ন হক মুন্সী’। অডিও ক্যাসেট এবং সিডি আকারে এটি প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেছে ‘আশিক মিউজিক’। তাদের ফেসবুক পেজের মাধ্যমেই এটি পাওয়া যাচ্ছে।
সংস্থাটির কর্ণধার গহর আশিক জানান, “ক্যাসেটটি আমাদের কাছে ৭-৮ বছর আগে থেকেই ছিল। কিন্তু ক্যাসেট যুগ শেষ হবার কারণে রেকর্ডের কাজ এবং স্পন্সরের অভাবে প্রকাশ করতে দেরি হয়েছে। অবশেষে ক্যাসেটটি প্রকাশ করতে পেরে ভালো লাগছে। পাশাপাশি সিডি আকারেও এটি আমরা নিয়ে এসেছি।
বিজ্ঞাপন
১৯৬১ সালে ঢাকার শান্তিনগরে নয়ন হক মুন্সীর জন্ম। ১৯৭৬ সালে ফোয়াদ নাসের বাবু, পিয়ারু খান, দুলালকে নিয়ে তাদের ব্যান্ড ‘অস্থির’ বিলুপ্ত করে আজম খানের ‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডে যোগ দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। আজম খানের ‘আলাল আর দুলাল’, হ্যাপি আখন্দের ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ ইত্যাদি গানে গিটার বাজিয়েছিলেন নয়ন মুন্সী।
জানা যায়, ১৯৭৭ সালে টিভিতে একটি শো দেখে আইয়ুব বাচ্চু ইচ্ছাপোষণ করেন নয়ন মুন্সী'র মতো গিটারিস্ট হবার।
বিজ্ঞাপন
১৯৭৯ সালে কানাডায় পাড়ি জমান নয়ন। সেখানে গিয়ে বিদেশীদের নিয়ে ‘ফ্ল্যাশ ল্যান্ডিং’ নামে ব্যান্ড গড়ে তোলেন। তারপর ব্যান্ডটি বিভিন্ন হোটেলে শো করতে থাকেন। তার জনপ্রিয়তায় মুগ্ধ হয়ে একটি পাঁচ তারকা হোটেল তাদের হোটেলে ‘দ্যা নয়ন মুন্সী শো’ নামে শো চালাতে থাকে।
বিখ্যাত গিটারবাদক কার্লোস সান্তানার কনসার্ট–ট্যুর প্রমোশনের জন্য গিটার প্রতিযোগিতা হয়েছিল একবার। নয়ন মুন্সী সেখানে বিজয়ী হয়ে তাক লাগিয়ে দেন। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক রেকর্ড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কথা ছিলো তার। কিন্তু আফসোস! ঠিক তখনি ১৯৮১ সালের ২১ অক্টোবর বাসায় ফেরার পথে গাড়ি দুর্ঘটনায় মাত্র ২০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান নয়ন মুন্সী।
তার মরদেহ দেশে এনে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়। বাংলাদেশে তার মরদেহ পাঠানোর সময় কফিনের পাশে কবিতা লিখে দেন কানাডার এক বিখ্যাত কবি। কিছুদিন পর রকেটের সুরে আজম খান নিজের কথামালা দিয়ে তৈরি করেন ‘নয়ন সবার নয়ন মণি’।
আরআইজে