‘সালাম সালাম হাজার সালাম’- এ গান শোনেনি, এমন বাঙালি শ্রোতা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। যুগ যুগ ধরে গানটি বাঙালির প্রাণে দেশাত্মবোধ জাগিয়ে আসছে। কিন্তু কালজয়ী এই গানের গীতিকবি ফজল-এ-খোদা বরাবরই থেকে গেছেন নীরবে-নিভৃতে।

বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন ফজল-এ-খোদা। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) দুপুরে তাকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার (২ জুলাই) দুপুরে ঢাকা পোস্ট-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার পুত্র সজীব ওনাসিস।

তিনি জানান, তার বাবা ও মা দু’জনেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে বাবা ফজল-এ-খোদার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন সজীব।

জানা গেছে, ফজল-এ-খোদার জন্ম ১৯৪১ সালের ৯ মার্চ পাবনা জেলার বেড়া থানার বনগ্রামে। তিনি একজন কবি, ছড়াকার ও গীতিকার। তার রচিত ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ জায়গা করে নিয়েছে বিবিসি’র সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গানের তালিকায়।

১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু করে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০ বছর ফজল-এ-খোদা অসংখ্য দেশাত্মবোধক, আধুনিক, লোক সংগীত, ইসলামী গান রচনা করেছেন। তার রচিত কালজয়ী গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-‘যে দেশেতে শাপলা শালুক ঝিলের জলে ভাসে’, ‘ভালোবাসার মূল্য কতো, আমি কিছু জানি না’, ‘কলসি কাঁধে ঘাটে যায় কোন রূপসী’, ‘বাসন্তী রং শাড়ি পরে কোন রমণী চলে যায়’, ‘আমি প্রদীপের মতো রাত জেগে জেগে’, ‘ভাবনা আমার আহত পাখির মতো’, ‘প্রেমের এক নাম জীবন’, ‘বউ কথা কও পাখির ডাকে ঘুম ভাঙেরে’ ও ‘খোকন মণি রাগ করে না’ ইত্যাদি।

ফজল-এ-খোদা গীতিকার হিসেবে বাংলাদেশ বেতারে তালিকাভুক্ত হন ১৯৬৩ সালে। এর পরের বছর ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে গীতিকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। গানের পাশাপাশি তিনি কবিতা ও ছড়া লিখেও প্রশংসিত হয়েছেন।

রাকিব হাসনাত/কেআই/আরআইজে