নায়করাজের ৮০তম জন্মদিন আজ, স্মৃতিচারণ করলেন সম্রাট
নায়করাজ রাজ্জাক, ছবি : সংগৃহীত
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের ৮০তম জন্মদিন আজ শনিবার (২৩ জানুয়ারি)। দিনটি উপলক্ষে পারিবারিকভাবে নানা আয়োজন করা হয়েছে বলে ‘ঢাকা পোস্ট’কে জানিয়েছেন নায়করাজের ছোট ছেলে ও অভিনেতা খালিদ হোসাইন সম্রাট।
তিনি বলেন, ‘বাবার জন্মদিন উপলক্ষে আজ পারিবারিকভাবে কিছু আয়োজন করেছি আমরা। এরমধ্যে রয়েছে দিনভর বাবার জন্য দোয়া করা, গরিবদের খাওয়ানো এবং সদকা দেওয়া।’
বিজ্ঞাপন
সম্রাট আরও বলেন, ‘বাবার জন্মদিন উপলক্ষে গতকালই ভাইয়া (নায়করাজের বড় ছেলে অভিনেতা বাপ্পারাজ) বনানী কবরস্থানে গিয়ে বাবার কবর জিয়ারত করেছে। আমি আজ (শনিবার) ফজরের নামাজ পড়ে কবরস্থানে এসেছি।’
বাবার সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সম্রাট বলেন, “২০১৬ সালের তথা বাবার সর্বশেষ জন্মদিনটির কথা কখনো ভুলবো না। তার আগে বাবা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তখন মাত্রই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন। সব কিছু ভুলে যেতেন। স্মৃতিশক্তি তেমন ছিল না। আনমনা হয়ে বসে থাকতেন। সেবার চ্যানেল আই অনেক বড়ভাবে বাবার জন্মদিনের আয়োজন করে। পারিবারিকভাবে আমরাও খুব বড় আয়োজনে দিনটি উদযাপন করি। অনেক আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াত করা হয়। সেদিন বাবা খুব আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলেন। খুব খুশি হয়েছিলেন। আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, ‘আমি ভাবি না যে আবার বেঁচে থাকবো।’ তাঁর চোখে এমন আনন্দ জীবনে খুব কমই দেখেছি। সেটি ছিল বেঁচে থাকার আনন্দ। কিন্তু সেই হারিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই হারিয়ে গেলো।”
বিজ্ঞাপন
১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন নায়করাজ রাজ্জাক। পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক। ১৯৬৪ সালে কলকাতায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হলে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন তিনি।
কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙালি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর। তবে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ জহির রায়হানের ‘বেহুলা’র মধ্য দিয়ে। সিনেমাটিতে তার নায়িকা ছিলেন সুচন্দা। তারপর থেকে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা এবং পরিচালনার মাধ্যমেও সিনেমাকে আপন করে নিয়েছিলেন তিনি।
বাংলা ও উর্দু মিলিয়ে মোট ৩০০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই কিংবদন্তি। তাঁর নিজের গড়া প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশনের ব্যানারেও তৈরি করেছেন অনেক সিনেমা।
ঢাকাই চলচ্চিত্রে রাজ্জাকের উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে-‘অবুঝ মন’, ‘আলোর মিছিল’ ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘রংবাজ’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘জীবন থেকে নেওয়া’ ‘পিচঢালা পথ’, ‘অশিক্ষিত’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’ প্রভৃতি।
সেরা অভিনেতা হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন দাপুরে এই অভিনেতা। শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৫ সালে ভূষিত হন স্বাধীনতা পদকে। তাঁর সর্বশেষ সিনেমা ‘কার্তুজ’ মুক্তি পায় ২০১৪ সালে।
২০১৭ সালের ২১ আগস্ট বাংলা সিনেমার সর্বকালের অন্যতম সেরা এই অভিনেতা পরলোকে পাড়ি জমান।
আরআইজে