কিরণ রাওয়ের পরিচালিত শেষ ছবি ‘লাপাতা লেডিজ’ নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়ায় মুক্তির পরই দর্শক ও সমালোচকরা প্রশংসায় ভরিয়ে দেন। গল্পের সরলতা, অভিনয়ের আন্তরিকতা এবং নারীকেন্দ্রিক বার্তা— সব মিলিয়ে ছবিটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দারুণ সাড়া ফেলে। তবে ওটিটিতে প্রশংসা কুড়ালেও প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি ২১ কোটি টাকার সীমা ছুঁতে পারেনি। 

বক্স অফিসে এই সীমিত সাফল্য যেন ছবির অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি। তবে কিরণ সম্প্রতি জানিয়েছেন, ওটিটিতে মুক্তির পর ছবিটির থিয়েটার দর্শকসংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছিল, যা প্রমাণ করে ভালো গল্প কখনও হারায় না শুধু সময়ের অপেক্ষা করে।

কিরণের দাবি, ‘ওটিটি মুক্তির আগে ছবির প্রচারের জন্য সময় ছিল খুবই কম। মুখে মুখে প্রশংসা হচ্ছিল, সিনেমা হলেও ভালো চলছিল। কিন্তু নেটফ্লিক্সে আসার পর সেই প্রশংসা আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ে, যার প্রভাব পড়ে থিয়েটার রেভিনিউতেও। প্রায় এক মাস ধরে ছবিটি হল ভর্তি দর্শক টেনেছে, তারপর ধীরে ধীরে কমে গিয়েছে সেই জোয়ার। এ অভিজ্ঞতা বিরল কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ। প্রমাণ করে যে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আসলে প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং সহায়ক।’

‘নেটফ্লিক্সে লাপাতা লেডিজ ঠিক ততটাই ভালো করেছে, যতটা সাফল্য পেয়েছিল সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার ২০২৩ সালের ব্লকবাস্টার অ্যানিম্যাল, যদিও আমাদের ছবিতে ছিল না কোনও বড় তারকা, না ভয়ঙ্কর অ্যাকশন দৃশ্য। দক্ষিণী পরিচালকরা বিগত কয়েক বছরে হিন্দি সিনেমার তুলনায় অনেক ভালো পারফর্ম করেছেন— পুষ্পা, কেজিএফ, কান্তারা তার উদাহরণ।’

কিরণ বলেন, ‘সব দোষ আমাদের ঘাড়ে চাপানো হয়। সবাই বলে হিন্দি সিনেমা খারাপ, সফল হয় না। অথচ আমাদের ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে নেই কোনো একক সংগঠন, নেই কোনো সম্মিলিত নেতৃত্ব। যেন এক বিশাল দানব, যার মাথা নেই। আমরা এক জটিল অবস্থায় আছি।’

তার মতে, ‘মার্কেটিং এখন যেন অন্ধকারে চোখ বেঁধে তীর ছোঁড়া। সিনেমা হলগুলো, যারা এক সময়ে গর্ব করে ট্রেলার চালাত আজ যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অন্য ছবির সঙ্গে জুড়ে দিতে হয় অনুরোধ করতে হয় কখনও তো টাকা দিয়েও জায়গা কিনতে হয়। যেন নিজের সিনেমার জন্য ভিক্ষা চাইছি। এটা আমার কাছে শুধু অপমানজনক নয়, অর্থহীনও।’

এমআইকে