ওমর সানীর প্রশ্ন, এ দেশ শ্রীলঙ্কা হতে আর কত কিলোমিটার বাকি?
শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে সবচেয়ে বিপর্যস্ত সময় যাচ্ছে বর্তমানে। দেশটির অর্থনীতি কার্যত ধ্বসে পড়েছে। ইতোমধ্যে দেশটির সব মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। দ্রব্যমূল্যে ছুঁয়েছে আকাশ। জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা।
এদিকে চলমান রজমানে বাংলাদেশও মোবাকিলা করছে নানা সংকট। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি থেকে শুরু করে, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট, সড়কের তীব্র জ্যামে অতিষ্ট নগরবাসী। আর এই সময়ে শ্রীলঙ্কাকে উদাহরণ হিসেবে টেনে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক ওমর সানী।
বিজ্ঞাপন
গতকাল (৫ এপ্রিল) ফেসবুকের একটি পোস্টে ওমর সানী প্রশ্ন তোলেন, ‘এ দেশ শ্রীলঙ্কা হতে আর কত কিলোমিটার বাকি (আল্লাহ না করুক)!’
ওই পোস্টে লেখা রয়েছে, ‘টিপ নিয়ে কথা হলো। কথায় কাজও হয়েছে। সেই পুলিশ সদস্য বিচারের আওতাধীন হয়েছে। এবার তবে বাজারে চৈত্রের খরাতপ্ত দুপুরের মতন আগুন লাগা দ্রব্যমূল্য নিয়ে কথা হোক। গ্যাস সংকট নিয়ে কথা হোক। শতভাগ বিদ্যুৎয়ানের দেশে দৈনিক এত এত লোডশেডিং নিয়ে কথা হোক। যাতাকলে আটকে পড়ার মতন রাস্তায় ট্র্যাফিক জ্যাম নিয়ে কথা হোক। শহরে মশার উপদ্রবে সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা নিয়ে কথা হোক।’
বিজ্ঞাপন
এতে আরও লেখা রয়েছে, ‘অসহনীয় দ্রব্যমূলে আম জনতার নাভিশ্বাস উঠছে। বাজারে বেগুনের মূল্য ১০০ টাকা কেজি। সয়াবিন তেল, চাল, শাক-সবজি সবকিছুর দাম আকাশচুম্বী। সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকা মধ্যবিত্তরা মুখ ঢেকে টিসিবির লাইনে দাঁড়াচ্ছে। তাতে আবার কেউ কেউ সেইসব ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে সহানুভূতি দেখাতে আহাজারি করছে। যানজটে স্থবির হয়ে আছে তামাম ঢাকা শহর। অফিস থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে যানজটে ইফতারের সময় চলে যায়। দৈনিক একজন মানুষ গড়ে ৩-৪ ঘণ্টা এই মনোরম মনোটোনাস শহরে রাস্তার ট্র্যাফিকে নষ্ট করছে।’
‘কুলি’ খ্যাত এই নায়কের পোস্টটিতে উল্লেখ আছে, ‘গ্যাস নাই। যাও আবার আছে তাতে প্রেশার একদম কম। রান্না-বান্নার উপায় নাই। সুতরাং গ্যাস নিয়ে কথা হোক। অন্তত রান্না-বান্নাটা যেন ঠিক মত করে রোজা রাখা যায়। সরকার শতভাগ বিদ্যুৎয়ানের দেশ ঘোষণা করেছে। অথচ দৈনিক ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং। শতভাগ বিদ্যুৎয়ানের দেশে এত লোডশেডিং দিয়ে বিদ্যুৎ জমিয়ে কি করছে কর্তাবাবুরা?’
সানী জানান, এই লেখাটি মূলত মিশুক মুনীর নামে একজনের। লেখাটি ভালো লাগায় সেটির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনিও এটি পোস্ট করেছেন।
ঢাকা নগরীর নানা সংকট নিয়ে ওই পোস্টে আরও বলা হয়েছে, ‘মশা মারতে কামান নিয়ে এসেও সিটি কর্পোরেশনের মেয়ররা ব্যর্থ। শ্রীলঙ্কার সংসদে অনেক সেলিব্রেটি এমপি-মন্ত্রী হয়েছিল। তারাও জনগণকে উন্নয়ের গল্প বলতো। আচানক এখন শ্রীলঙ্কার জনগণ দেখলো তাদের পরনের কাপড় পর্যন্ত নাই। গোটা দেশ এখন ল্যাংটা। যেহেতু কপালে টিপ দিয়ে কথা বলাতে কাজ হয়েছে সেহেতু এবার অন্তত গলায় বেগুন ঝুলিয়ে ট্র্যাফিক জ্যামে বসে খালি গ্যাসের চুলার ছবি দিয়ে কথা হোক। কথা বললে যদি কাজ হয় তবে এবার এটুকু কথা বলা হোক। নীতিহীন নেতা, অপরিকল্পিত নগর, জবাবদিহিতার অভাব সবকিছু রোজদিন আমাদের মারে।’