‘মাটির ময়না’র ডিরেক্টরস ফোর্টনাইট খ্যাত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ৷ বাণিজ্যিক ধারার বাইরে গিয়ে বলতে চেয়েছেন সাধারণ মানুষের গল্প, নিজের জীবনের গল্প। হয়ে উঠেছিলেন বাংলার সত্যজিৎ। সিনেমার এই ফেরিওয়ালার আজ ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক কাতারে নিয়ে যাওয়াসহ দেশের চলচ্চিত্রে বিকল্প ধারা প্রচলন করেছিলেন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ। স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকারদের অন্যতম একজন এই নির্মাতা। চলচ্চিত্র পরিচালকের পাশাপাশি তিনি প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, লেখক ও একইসঙ্গে গীতিকারও ছিলেন।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় জন্ম নেওয়া তারেক মাসুদের বাল্যকাল কেটেছে গ্রামের মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। তার শৈশবে মাদ্রাসা পড়ার অভিজ্ঞতা নিয়েই ২০০২ সালে নির্মাণ করেছিলেন তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি মাদ্রাসা শিক্ষার পরিবর্তে স্কুলে ভর্তি হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।

তারেক মাসুদের জীবন হয়ে উঠেছিল শুধুমাত্র সিনেমার। তার থাকার বাসস্থান নিয়মিত ব্যবহার হতো সিনেমা তৈরির কাজে। সিনেমাই হয়ে উঠেছিল তার জীবন, মৃত্যু। তাই সিনেমা তৈরি করতে গিয়েই অকালে মৃত্যুবরণ করেন সিনেমার এই ফেরিওয়ালা।

‘কাগজের ফুল’ নামে সিনেমা তৈরির জন্য চিত্রনাট্য তৈরি করেছিলেন তারেক ও ক্যাথরিন মাসুদ। সিনেমার শুটিং স্পট খুঁজতে গিয়েছিলেন মানিকগঞ্জের ইছামতি নদীর তীরে। সেখান থেকে তার বন্ধু মিশুক মুনীর ও স্ত্রী ক্যাথরিনের সঙ্গে ফিরছিলেন। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকা কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের জন্য। মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিভে যায় সিনেমার ফেরিওয়ালার জীবন প্রদীপ। যে জীবন তৈরি করতে পারত অসংখ্য প্রশংসিত সিনেমা।

রবিউল হক/কেএইচটি