কেউ কেউ হয়ত নিয়ম করে সপ্তাহে সামান্য মদপান করে থাকেন। এতেই মস্তিষ্কের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার কমিউনিকেশন্স’-এ।

৩৬ হাজার পুরুষ ও নারী, যারা মদপান করেন তাদের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা। সপ্তাহে তাদের মদ্যপানের অভ্যাস ও পরিমাণ খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকেরই মস্তিষ্কের এমআরআই স্ক্যান করা হয়েছে।

গবেষকরা দেখেছেন, যারা সপ্তাহে খুব সামান্য পরিমাণে বা মাঝারি পরিমাণে মদ্যপান করেন তাদেরও মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের বিকৃতি ঘটে। ব্যাহত হয় স্মৃতিশক্তি-সহ মস্তিষ্কের নানা ধরনের সক্রিয়তা।

উদাহরণ দিয়ে গবেষকরা দেখিয়েছেন, ৫০ বছর বয়সী কোনো পুরুষ বা নারী যদি দিনে গড়ে একটি বিয়ার বোতলের অর্ধেক (যাকে এক ইউনিট অ্যালকোহল সেবন বলা হয়) বা পুরোটা খান অথবা খান এক গ্লাস করে ওয়াইন তা হলে তাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ কম করে দুই বছর বুড়িয়ে যায়। তার মানে, দুই বছর বয়স বাড়লে মস্তিষ্কের ওই সব অংশের আকার যেমন বদলে যেত ও কাজকর্মের গতি যতটা শ্লথ হয়ে পড়ত, তেমনটাই হয়।

আর ৫০ বছর বয়সী কেউ যদি দিনে গড়ে দুই বা তিন ইউনিট অ্যালকোহল সেবন করেন, তাহলে তাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের ক্ষয়ক্ষতি হয় আরও দ্রুত হারে। তাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ তিন থেকে সাড়ে তিন বছর বেশি বুড়িয়ে যায়।

গবেষকরা জানান, বহু সংখ্যক মাদকসেবনকারীর ওপর পরীক্ষাটি চালানো হয়েছে বলে দৈনিক গড়ে বিয়ারের অর্ধেক বোতল আর গোটা এক বোতল খাওয়ার অভ্যাসে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে যে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো হয়, যেভাবে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মগুলোর গতি হ্রাস পায়, সেগুলো ধীরে ধীরে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে, সেই সবও ধরা পড়েছে এ গবেষণায়।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানান, এ গবেষণা যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। কারণ মেপেজুপে মদ্যপান করার যেসব কথাবার্তা শোনা যায়, কোথাও কোথাও তার নিয়মকানুনও বেঁধে দেওয়া হয়, অন্তত মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের আকার ও কাজকর্মের পরিবর্তনে সেসবের যে কোনো গুরুত্বই নেই, এ গবেষণাই প্রথম তার তথ্যভিত্তিক প্রমাণ হাজির করল।

নতুন গবেষণাটি জানাল, অত্যধিক না হলেও চলবে। খুব সামান্য মদ্যপানের অভ্যাসও মানব-মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের কাজকর্মের স্বাভাবিকতার অন্তরায় হয়ে ওঠে।

এসএসএইচ