ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জীবন শুরুই হলো না, যেভাবে শিশু রাসেলের জীবন নিভে গেল, এ এক নির্মমতা।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এই বয়সের শিশুরা এটা-ওটা চায়। কিন্তু ঠিক এর বিপরীত ছিলেন শেখ রাসেল। সে গ্রামে যেতে ভালবাসতেন। গ্রামে যাওয়ার সময় অনেক জিনিসপত্র নিয়ে যেতেন। গ্রামে গিয়ে গরীব ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের জিনিসপত্র দিতেন। গ্রামের গরীব মানুষদেরও জিনিসপত্র দিতেন। অন্যের সেবাই  করাই ছিল তার জীবনের লক্ষ্য।

তিনি আরও বলেন, পঁচাত্তরের কালো রাতে ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে ঘাতকরা হামলার পর শিশু রাসেল ৩২ নম্বর বাড়ির দু’তলা থেকে নিচে নেমে আসেন। এ সময় শিশু রাসেল যখন ভয় পেয়ে বার বার মায়ের কাছে যেতে চাইলেন, অমানুষ, বিশ্বাস ঘাতক শিশু রাসলেকে হাতে ধরে মায়ের কাছে নিয়ে গেল। ঘাতকরা মায়ের নিথর দেহের সামনেই শিশু রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। একটি জন্তুও এ ধরনের শিশুকে হত্যা করতে পারত না! শেখ রাসেলকে হত্যা মানবতার বিরুদ্ধে বিরাট অপরাধ।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে নির্মল ব্যক্তিত্ব, নিষ্পাপ ব্যক্তিত্ব ও নির্ভীক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারতেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রায় সব রাষ্ট্রীয় সফরে বিদেশে শেখ রাসেলকে নিয়ে যেতেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বের বড় বড় নেতা ফিডেল ক্যাস্ট্রো, গর্বাচভের পাশেও শেখ রাসেলকে নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্য ছিল দেশের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শেখ রাসেলকে যোগ্য হিসেবে তৈরি করা।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বিদেশ থাকায় পঁচাত্তরের কালো রাতে বেঁচে গিয়েছিলেন। মোস্তাক জিয়ারা বঙ্গবন্ধুর সব উত্তরাধিকার ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল। শেখ রাসেলকে হত্যা করেছিল মোস্তাক জিয়া যাতে উত্তরাধিকার হিসেবে তারা দেশ শাসন করতে না পারে।

উপাচার্য আরও বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু শেখ রাসেলকে হত্যা করেছিল তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। এ খুনি প্রেতাত্মাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এখন সময় এসেছে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বংশধরদের সঙ্গেও আমাদের কথা না বলা। তারা যাতে ক্ষমতায় না আসে সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএসএমএমইউ'র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদার। 

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

টিআই/এমএ