‘শহরের তুলনায় গ্রামে স্ট্রোকের প্রবণতা বেশি’
দেশে স্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বর্তমানে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১১ জনের স্ট্রোক হতে পারে। আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, বর্তমানে শহরের তুলনায় গ্রামে স্ট্রোকের প্রবণতা বেশি। সে ক্ষেত্রে গ্রামের রোগীরা যেন পরিপূর্ণ সেবা পান, সেদিকে নজর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে এভারকেয়ার হাসপাতাল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
বক্তারা বলেন, স্ট্রোক এমন একটা অসুখ, যা পৃথিবীতে দ্বিতীয় মৃত্যুর কারণ। বর্তমানে আমাদের গড় আয়ু ৭২ বছর। আর দেশের বড় একটা অংশ ষাটোর্ধ। এই বয়স্ক ব্যক্তিরা স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিউরোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফিরোজ আহমেদ কোরাইশি। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় ৪০ বছর কিংবা তার বেশি বয়সী রোগীদের স্ট্রোক হয়। এক্ষেত্রে সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপামর জনগণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, জনগণ সচেতনতার বিষয়ে বুঝতে পারে না। এক্ষেত্রে জনসচেতনতার মধ্যে মিডিয়াকর্মীদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিজ্ঞাপন
ফিরোজ আহমেদ বলেন, সরকারি হাসপাতালে খুবই সমস্যা হয়। ট্রলি নাই, ইমার্জেন্সিতে ঠিকমতো জনবল থাকে না। শুরুতে ওয়ার্ড বয়, তারপর নার্স দেখবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সিটি স্ক্যান, এরপর দীর্ঘসময় অপেক্ষা তারপর চিকিৎসা। এখানেই বড় একটা সময় চলে যায়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসির রিজভী। তিনি বলেন, স্ট্রোকের চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালে খরচ খুবই কম। পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। চিকিৎসায় খুবই কম খরচ হয়। মেজর কমপ্লিকেশন না থাকলে দুই-চার দিনের মধ্যেই রোগী চলে যেতে পারেন।
এক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে রোগীদের চিকিৎসায় খরচের ব্যাপারে আরেকটু সদয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে একটি অত্যাধুনিক হাইপার অ্যাকিউট স্ট্রোক কেয়ার ইউনিট চালু করেছে এভারকেয়ার হাসপাতাল। ইউনিটে দক্ষ মেডিকেল কর্মী ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা ২৪ ঘণ্টাই স্ট্রোকের রোগীদের জরুরি সেবা প্রদানে নিয়োজিত থাকবে। এখানে হাইপার অ্যাকিউট স্ট্রোক রোগীদের জন্য থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি প্রদানের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ টিমের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পোস্ট থ্রম্বোলাইসিস রোগীর চিকিৎসা করা হবে। এছাড়াও এই ইউনিটে হাইপার অ্যাকিউট স্ট্রোক রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড বেডের ব্যবস্থা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এভারকেয়ার হাসপাতালের ডিরেক্টর অব মেডিকেল সার্ভিসেস ডা. আরিফ মাহমুদ। এ সময় তিনি বলেন, স্ট্রোক থেকে বাঁচতে আমাদের হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ধূমপান করার অভ্যাস থাকলে পরিহার করতে হবে।
তিনি বলেন, স্ট্রোক আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় হাসপাতাল বাছাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে যেকোনো স্পেশালাইজড সরকারি হাসপাতালে যেতে পারেন, বা ভালো কোন বেসরকারি হাসপাতালেও আসতে পারেন।
টিআই/এসকেডি