দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হলেও এখনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের জন্য আমাদের আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। এটি এখনো ডেভেলপিং পর্যায়ে আছে, পরিপূর্ণভাবে ডেভেলপ হয়নি। আমরা খোঁজ-খবর রাখছি।

সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন >> হঠাৎ বেড়েছে জ্বরের রোগী, আশঙ্কার বিষয় বলছেন বিশেষজ্ঞরা

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যে সমস্ত দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। যখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোন টিকার অনুমোদন দেবে, আমরা সেই টিকা অবশ্যই আনার চেষ্টা করব। আমরা এখনো সে মানের কোনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন পাইনি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখন পর্যন্ত কোনোটি অনুমোদন দেয়নি।

ঊর্ধ্বগামী ডেঙ্গু, নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা কী-- জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের তো একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। আপনারা দেখেছেন করোনায় এর চেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল। হাসপাতালে অনেক বেশি রোগী ছিল, তারপরও আমরা ভালোভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। কাজেই ডেঙ্গু যদি আরও বাড়েও আমরা সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।

তিনি বলেন, আশা করি ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা খুব শিগগিরই কমে আসবে। এখন বর্ষা মৌসুম, বৃষ্টি বাড়ছে, পাশাপাশি আমরা নিয়মিত স্প্রে করছি। তবে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আমরা ইনশাল্লাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।

আরও পড়ুন >> ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর ৫ নির্দেশনা

হাসপাতালে স্যালাইন সংকটে বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির ওপর নির্ভরতা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে (আইপিএইচ) আগে স্যালাইন-ফ্লুইড তৈরি হতো। কিন্তু সেটি এখন বন্ধ আছে। কারণ, ওই সময়টাতে তৈরির স্থানটি ছিল খুবই জরাজীর্ণ। সেই অবস্থায় যদি সেখানে ফ্লুইড তৈরি হয়, তাহলে উল্টো সেটা মানুষের জন্য ক্ষতিকারক হতো। আমরা সেই কারণেই তখন বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এখন সেটাকে আমরা নতুন করে মেশিনপত্র এনে, অবকাঠামোগত কিছু মেরামত করেছি। আমরা সেটাকে আবারও পর্যবেক্ষণ করব এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর দেখবে। ওষুধ প্রশাসন যদি পরিদর্শন করে অ্যাপ্রুভাল দিয়ে দেয় যে, এখানে এখন মানসম্মত হবে ফ্লুইড স্যালাইন তৈরি করতে পারব, তাহলে আমরা সেখানে প্রোডাকশনের কাজ শুরু করে দেব।

তিনি আরও বলেন, গোপালগঞ্জে আমাদের নতুন ইডিসিএল প্লান্টে ভ্যাকসিনের একটা ইউনিট আছে, হয়তো এ বছরের শেষ নাগাদ আমরা সেখানে উৎপাদন শুরু করতে পারব। আর যদি উৎপাদন শুরু হয়, তাহলে আর বাইরে থেকে স্যালাইন আনতে হবে না। 

আরও পড়ুন >> পশ্চিমবঙ্গে দাপট দেখানো ডেঙ্গুর স্ট্রেনে ঝুঁকি কম

মন্ত্রী বলেন, এখন যেহেতু হঠাৎ করে স্যালাইনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে, তাই বাধ্য হয়ে ওষুধ কোম্পানিগুলো থেকে নিচ্ছি। আমাদের অনেক বড় বড় ওষুধ কোম্পানি আছে, তারা আমাদের স্যালাইন সাপ্লাই দিচ্ছে, আমরাও তাদের কাছ থেকে নিতে থাকব। আমাদের যে প্ল্যান আছে, এখানকার ক্যাপাসিটি খুবই কম, তারপরও আমরা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন পেয়ে গেলে আমরা সেখানে উৎপাদন শুরু করব।

টিআই/এমএ