মা ও কিশোরীদের পুষ্টিতে আরও বেশি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি
পাঁচ বছরের কম বয়সী খর্বাকৃতির শিশুদের অনুপাত ৪০ শতাংশ কমানোর ক্ষেত্রে ২০২৫ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পথে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে এই অগ্রগতি ধরে রাখার জন্য কিশোরী ও মায়েরা যাতে পর্যাপ্ত পুষ্টি পরিষেবা পায় তা নিশ্চিত করা আবশ্যক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই অবস্থায় সারা দেশের সকল মা ও কিশোরীদের জন্য পুষ্টি পরিষেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার আরও বেশি লোকবল ও বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ফেড টু ফেইল’ শীর্ষক এক সম্মেলনে বক্তারা এসব তথ্য জানান। বাংলাদেশে কিশোরী ও নারীদের জন্য পুষ্টিগত যত্ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো চিহ্নিত করতে ইউনিসেফের সহায়তায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় আজ এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
বিজ্ঞাপন
বক্তারা বলেন, অপর্যাপ্ত পুষ্টি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ দুর্বল করে দিতে এবং গর্ভাবস্থা ও প্রসবকালীন ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মেয়ে ও নারীদের পুষ্টির অবস্থা উন্নত করার অঙ্গীকার করেছে।
তারা বলেন, অপুষ্টিতে ভোগা মেয়ে ও নারীরা যখন গর্ভবতী হয়, তাদের কম ওজনের শিশু জন্ম দেওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৬ লাখ ৪ হাজার শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এই শিশুদের প্রায় ২৮ শতাংশ অপুষ্টি ও দারিদ্র্যের আন্তঃপ্রজন্মীয় চক্রের মধ্যে পড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে মা ও কিশোরীরা যাতে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি পরিষেবা সময় মতো পেতে পারে সেজন্য বিভিন্ন ‘ফ্ল্যাগশিপ’ পুষ্টি কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউনিসেফ বাংলাদেশ, সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং বেসরকারি খাতের অংশীজনদের সহযোগিতা করছে।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা বর্তমানে পঞ্চম স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাত কর্মসূচি তৈরি করছি যা ২০২৪ সাল থেকে শুরু হবে। আমরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য বিনিয়োগ বাড়াব।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, মা এবং অল্প বয়সী মেয়েদের জন্য সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করার পেছনে বিনিয়োগের অনেক অর্থনৈতিক সুফলও রয়েছে এবং তা বিভিন্ন সময়ে প্রমাণিত। আজ এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করলে, তা আগামী কয়েক দশক ধরে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উৎপাদনশীলতা ও সার্বিক কল্যাণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, অপর্যাপ্ত পুষ্টির সঙ্গে জড়িত হচ্ছে শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধকতা, যা আগামী প্রজন্মের জন্য জীবনভর দুঃখকষ্ট ও দারিদ্র্যের কারণ হতে পারে। বাংলাদেশ বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পুষ্টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। এই অগ্রগতি বজায় রাখতে যাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ও বয়ঃসন্ধিকালীন পুষ্টি পরিষেবার ঘাটতিগুলো মোকাবিলা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
টিআই/এনএফ