সিজার করাতে এসে নারীর মৃত্যু, ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি
ইবনে সিনা হাসপাতালে সিজার করাতে গিয়ে জরায়ু কেটে ফেলা এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকের অবহেলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে পলি সাহা নাম এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে আগামী ৭ (সাত) কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ মার্চ) ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাইরেক্টর (এডমিন) অ্যান্ড ইউনিট ইনচার্জ অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়েছে, পলি শাহা (২৪), স্বামী আশীষ রায় (মুন্না), (ভর্তি আইডি-A240301032729) গত সোমবার সকাল ৯টা ৯ মিনিটে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় তিনি আইসিইউতে মারা যান। ওই রোগী মারা যাওয়ার প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও প্রতিবেদন প্রদানের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
কমিটিতে চেয়ারম্যান করা হয়েছে হাসপাতালটির প্রাক্তন-অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (অবস্ অ্যান্ড গাইনি) অধ্যাপক ডা. ফারহানা দেওয়ানকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে আইএসএমসিএইচ বিভাগের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুস সোবহান মুন্সীকে। এছাড়াও অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (অবস্ অ্যান্ড গাইনি) ডা. নূর সাঈদা ও আইএসএমসিএইচর সহযোগী অধ্যাপক ডা. একেএম মহিউদ্দীন ভূঁইয়াকে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৭ (সাত) কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য বলা হলো।
এর আগে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাতে মারা যাওয়া পলি সাহার স্বামী আশীষ রায় (মুন্না) ঢাকা পোস্টকে জানান, গত সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে প্রসবজনিত সিজার করাতে স্ত্রীকে নিয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালে আসেন তিনি। এরপর অপারেশন করতে গিয়ে কাটা হয় রোগীর জরায়ু। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং সেই অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক হলে মঙ্গলবার বিকেল চারটায় পলি সাহাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার স্ত্রীকে যথাযথভাবে অপারেশন করা হয়নি। নিশ্চয়ই তারা কোথাও সমস্যা করেছে, যার কারণে তাকে এতো দ্রুত মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। তার চিকিৎসার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট অবহেলা আমরা দেখেছি।
তবে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার বিষয়টি অস্বীকার করে ইবনে সিনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাস্টমার কেয়ার শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, রোগীর অবস্থা এমন একটা পর্যায়ে ছিল যে তাকে বাঁচাতে হলে জরায়ু কাটা ছাড়া কোন উপায় নেই। সেসময় রোগীর স্বামীর মৌখিক এবং লিখিত সম্মতি নিয়েই তার জরায়ু কাটা হয়। রোগীর ব্লিডিং বন্ধ করার জন্য এছাড়া চিকিৎসকদের আর কিছুই করণীয় ছিল না। সুতরাং এখানে অপারেশন করতে গিয়ে জরায়ু কেটে ফেলা, এটা পুরোপুরি ভুল অভিযোগ।
টিআই/এসকেডি