রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের পরামর্শ
রমজান মাস রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। এই মাসে সুশৃঙ্খল জীবনযাপন এবং ইবাদত বন্দেগি ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন এবং সুগার কমাতে সহায়তা করে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও এন্ডোক্রাইন (ডায়াবেটিকস ও হরমোন) বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. ফরিদ উদ্দিন বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
রমজানে তার দেওয়া পরামর্শগুলো হলো:
ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন। তবে তিন মাস আগে থেকে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তুতি নিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
রোজার সময় নিজে ডায়াবেটিসের ওষুধ সমন্বয় করবেন না, এতে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে।
রোজার সময় দিনে এবং রাতে সুগার মাপা উচিত, ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, এতে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।
সেহরির খাবার সেহরির শেষ সময়ের কিছু আগে খাওয়া উচিত। ইফতারের সময় বেশি চিনিযুক্ত খাবার খাবেন না।
রোজার সময় দিনের বেলা অতিরিক্ত ব্যায়াম করা উচিত নয়। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।
রোজার সময় রাতের বেলা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি (সম্ভব হলে ডাবের পানি), কম মিষ্টি রসালো ফল ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।
যারা দিনে এক বার ডায়াবেটিসের ওষুধ (যে সমস্ত ওষুধ ইনসুলিন এর পরিমাণ বাড়ায়) খান, তারা ইফতারের শুরুতে (রোজা ভাঙার সময়) একটু কম করে খেতে পারেন।
যারা দিনে একাধিকবার ডায়াবেটিসের ওষুধ খান, তারা সকালের মাত্রাটি ইফতারের শুরুতে এবং রাতের মাত্রাটি অর্ধেক পরিমাণে খাবেন।
ডায়াবেটিস রোগীদের সার্বিক কল্যাণের জন্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রচার মাধ্যমগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
রোজায় ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়ামের বিষয়ে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের পরামর্শ হচ্ছে, ডায়াবেটিস রোগীদের ব্যায়াম খুবই জরুরি, কিন্তু দিনের বেলায় রোগীদের অধিক ব্যায়াম করা উচিত নয়। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। রাতের বেলায় বিশেষ করে তারাবির নামাজের পর ব্যায়াম করাই ভালো। মনে রাখতে হবে, তারাবির দীর্ঘ নামাজে কিছুটা ব্যায়াম হয়ে যায়।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. ফরিদ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোজা ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশিরভাগ ডায়াবেটিস রোগীই রমজানের ফরজ রোজা রেখে থাকেন। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে যারা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া রোজা রাখেন, তারা বেশ কিছু জটিলতার সম্মুখীন হন। অথচ পূর্ব পরামর্শের মাধ্যমে ওই জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
তিনি বলেন, রমজানের সময় খাদ্য, ব্যায়াম, ওষুধপত্রের সমন্বয় ও রক্ত পরীক্ষা করার মাধ্যমে শর্করা নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। দিনের বেলায় রক্তের শর্করা পরীক্ষা করলে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। এ বিষয়ে আলেমদের ফতোয়া রয়েছে। এ বিষয়ে ‘রমজান ও ডায়াবেটিস’ নামে আমার লেখা একটি বই রয়েছে, চাইলে সংগ্রহ করা যেতে পারে। বইটি পড়লে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে।
আরএম/কেএ