স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু দুষ্কৃতকারী কর্মকর্তার হাত ধরে চাকরিবিধির লঙ্ঘন ঘটিয়ে প্রায় সহস্রাধিক ভুয়া পদোন্নতি, জনপ্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে ৫ শতাধিক ভুয়া পদায়ন দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। 

সংগঠনটির দাবি, চাকরিবিধির গুরুতর লঙ্ঘন হওয়ায় লিখিতভাবে অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়কে আপত্তি জানানোর পরও কিছু কর্মকর্তার পদোন্নতি-পদায়ন বাণিজ্য ও এ সংক্রান্ত নানা অনিয়ম থামানো যায়নি। বরং এই অন্যায়ের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়তে শুরু করেছে।

আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডা. নেয়ামত হোসেন।

তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র পর্যন্ত পদায়ন হওয়া স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রায় ৩৫ হাজার কর্মকর্তা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মূল মেরুদণ্ড। ক্যাডার সার্ভিস গঠন হওয়ার পর থেকে বিগত প্রায় ৪০ বছর ধরে আমরা দেশের মানুষকে নিরবচ্ছিন্নভাবে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে আসছি এবং শত সীমাবদ্ধতা, বৈষম্য ও অপ্রাপ্তির পরও আমরা দেশের জনগণকে সেবা প্রদানে কখনও পিছপা হইনি। কিন্তু বিগত কয়েক বছর আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সরকারি চাকরিবিধির গুরুতর লঙ্ঘন ঘটিয়ে ক্যাডার পদসমূহে ভিন্ন নিয়োগবিধির আওতায় নিয়োগপ্রাপ্ত এডহক ও প্রকল্প কর্মকর্তাদের পদায়ন ও পদোন্নতি দেওয়া শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু দুষ্কৃতকারী কর্মকর্তা।

নেয়ামত হোসেন বলেন, অদ্যবধি প্রায় সহস্রাধিক ভুয়া পদোন্নতি, জনপ্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে প্রায় ৫ শতাধিক ভুয়া পদায়ন, ক্যাডার কর্মকর্তাকে এডহকদের অধীনস্ত করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম চরম আকার ধারন করেছে। এর ফলে আমরা সুপ্রিম কোর্টে ২০২২ সালে মামলা দাখিল করতেও বাধ্য হই। মামলায় রুল জারি থাকলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের উক্ত চিহ্নিত অনিয়মকারী শাখার কর্মকর্তারা এডহক ও প্রকল্প কর্মকর্তাদের পক্ষে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত পদোন্নতি আদেশ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদায়ন শাখা পুনরায় অবৈধ পদায়ন আদেশ জারি করে।

অন্য বক্তারা বলেন— ভুয়া পদোন্নতি-পদায়নের কারণে দেশের ৩৫ হাজার ক্যাডার কর্মকর্তাই অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। এসব অনিয়মের সকল প্রমাণ থাকার পরও প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি তাদের প্রমার্জনার ফাইলে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। এমনকি ফাইলটি জনপ্রশাসন হয়ে বর্তমানে কর্মকমিশনের সুপারিশের অপেক্ষা করছে। এগুলো আমাদের স্বাস্থ্য ক্যাডারের সাথে চরম অন্যায়। আমরা সকল ক্যাডারকে আমাদের সাথে হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। এই অন্যায় ও জুলুম আমরা মানি না, মানবো না।  

টিআই/এনএফ