সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা
চিকিৎসক সংকট মোকাবিলায় দ্রুত বিকল্প উপায়ে নিয়োগের দাবি
দেশে চলমান চিকিৎসক সংকটের দ্রুত সমাধানে বিকল্প উপায়ে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে পিএসসি সংস্কার আন্দোলন। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে তিনটি বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও এখনও নিয়োগপ্রাপ্ত হননি এমন শত শত চিকিৎসক রয়েছেন, যাদেরকে নিয়োগ দিলে স্বল্প সময়ে সংকট অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
শনিবার (৩ মে) বিকেলে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) বটতলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তোলে সংগঠনটির চিকিৎসক পরিষদ। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ ডা. মো. সারোয়ার হোসেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশে চিকিৎসক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অথচ একসঙ্গে তিনটি বিসিএস প্রক্রিয়ার অনেক প্রার্থী সুপারিশ বা নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন। সরকারের উচিত, বিকল্প কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত তাদের নিয়োগ নিশ্চিত করা।
তিনি চারটি প্রধান দাবি তুলে ধরেন—
বিজ্ঞাপন
১. ৪৪তম বিসিএসে সুপারিশের অপেক্ষায় থাকা, ৪৫তম বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকা এবং ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকা চিকিৎসক প্রার্থীদের বিকল্প উপায়ে দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে।
২. বর্তমান চিকিৎসক সংকট নিরসনে সরকার বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে যে অতিরিক্ত দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিতে চায়, সেই প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের ঘোষণার সঙ্গে যেন কোনো ওভারল্যাপ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. চিকিৎসকদের জন্য বিসিএসের বয়সসীমা ৩২ থেকে বাড়িয়ে ৩৪ বছর করতে হবে এবং এটি পরবর্তী বিসিএস প্রজ্ঞাপনেই কার্যকর করতে হবে।
৪. বিশেষ বিসিএসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ডেন্টাল সার্জনের পদ সংযোজন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন এফসিপিএস প্রশিক্ষণার্থী ডা. আব্দুল্লাহ ইবনে এনাম। তিনি বলেন, বর্তমানে একজন চিকিৎসককে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী পর্যন্ত দেখার চাপ সামলাতে হচ্ছে। এতে চিকিৎসার মান যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি চিকিৎসকদের শারীরিক ও মানসিক চাপও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতিতে সরকার জরুরিভিত্তিতে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। তবে আমাদের উদ্বেগের জায়গা হলো—যারা ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএসে অংশ নিয়ে এখনও নিয়োগ পাননি, তারা যদি আবার ৪৮তম বিসিএসে অংশ নেয়, তাহলে পরীক্ষায় জটিলতা ও প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে। এই পরিস্থিতি এড়াতে চলমান বিসিএসগুলো দ্রুত সম্পন্ন করে বিকল্প উপায়ে প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া জরুরি।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই দাবি মানা হলে একদিকে যেমন চিকিৎসক সংকট দূর হবে, অন্যদিকে হতাশাগ্রস্ত বিসিএস প্রার্থীদের জন্য নতুন আশার আলো জ্বলবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যখাতে চলমান অচলাবস্থাও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
টিআই/জেডএস