এক ফোঁটা রক্ত, এক নতুন জীবনের গল্প। এই প্রেরণা থেকে ২০১৪ সালে কয়েকজন তরুণ মিলে গড়ে তোলেন ‘ব্লাডম্যান’। ফেসবুক-ভিত্তিক উদ্যোগটি এটি ধীরে ধীরে দেশের অন্যতম বৃহৎ রক্তদাতা নেটওয়ার্কে রূপ নেয়। বর্তমানে এই নেটওয়ার্কের আওতায় আছেন ৪ লাখেরও বেশি মানুষ। এর পাশাপাশি রয়েছেন ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবী, যাদের সিংহভাগই নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন।

কিছু প্রতারক এই সংগঠনের নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এতে যেমন সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি প্রশ্ন উঠছে একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নিয়েও। সম্প্রতি ব্লাডম্যানের নাম ব্যবহার করে সাইদুর নামে এক ব্যক্তি রক্তগ্রহীতার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এমন মহতী উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা ও প্রতারণা দায়ে সাইদুরের নামে গত সোমবার (১৯ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছে সংগঠনঠি। জিডি নম্বর ১৫৫৫।

ব্লাডম্যানের এক্সিকিউটিভ নওরিন সুলতানা নিশাত জানান, ‘গত ২২ এপ্রিল একজন রক্তগ্রহীতা ব্ল্যাডম্যানের সাথে যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করি। সেখান থেকে তথ্য নিয়ে সাইদুর রহমান (০১৭০৫০৩৭১৪৩) নামে এক ব্যক্তি ব্লাডম্যানের নাম ব্যবহার রক্তগ্রহীতার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ফোন করে ১০০০ টাকা অগ্রিম দাবি করে। রোগীর আত্মীয় জরুরী অবস্থার কারণে টাকাও প্রদান করেন। কিন্তু এরপর সাইদুর রহমান তাদের ব্লক করে দেন। 

সাইদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে হোয়াটসঅ্যাপে আপত্তিকর ছবি এবং মেসেজ পাঠায়, যা মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব ফেলেছে বলেও জানান ব্লাডম্যানের কর্মকর্তা নওরিন সুলতানা নিশাত।

এ বিষয়ে ব্লাডম্যানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আবু সালমান মো. আবদুল্লাহ বলেন, রক্ত দানের মতো একটা মহান কাজ নিয়ে প্রতারণা একটি অত্যন্ত ঘৃন্য ও মানবিকতা বিবর্জিত কাজ। বিপদের সময়ে রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে এভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেছি। আমরা আশা করি এই প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

প্রসঙ্গত, ব্লাডম্যান বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল রক্তদাতা প্ল্যাটফর্ম। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৪ ঘণ্টা সক্রিয়ভাবে সেবা দিয়ে আসছে। 

এমএএস