নতুন গবেষণায় দাবি
বয়স্কদের শরীরে তরুণ রক্ত দিলে কমতে পারে ত্বকের বয়স!
তরুণদের রক্ত গ্রহণ করে বয়স্কদের পুনরুজ্জীবিত করার ধারণা বিজ্ঞানীদের মধ্যে ক্রমেই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, তরুণদের রক্ত বয়স্কদের শরীরে সঞ্চারিত করলে ত্বকের বয়স কমানো সম্ভব হতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, তরুণের রক্তে এমন কিছু উপাদান থাকে যা ত্বকের কোষের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে সাহায্য করে, যার ফলে ত্বক আরও মসৃণ এবং টানটান দেখায়। এই গবেষণাটি মানুষের বার্ধক্য রোধে নতুন পথ খুলে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, রূপচর্চা করে, নিয়মিত যত্ন নিয়ে ত্বককে বেশি সময়ের জন্য সতেজ রাখা যায়। কিন্তু বয়স ঠেকানো যায় না! তবে বিজ্ঞানসম্মতভাবে ত্বকের কোষগুলোর বয়স কমিয়ে আনার কৌশল বের করা গেছে বলে তাদের দাবি। সম্প্রতি একটি গবেষণায় তেমন ইঙ্গিতই পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি জার্মানির বেইয়ের্সডর্ফ এজি সংস্থার বিজ্ঞানীরা, গবেষণাগারে মানুষের ত্বকের মডেল তৈরি করে একটি পরীক্ষায় নেন। সেই ত্বকের কোষগুলোতে প্রবেশ করানো হয় তরুণ রক্তের সিরাম (রক্তরস)। প্রাথমিকভাবে এতে ত্বকের কোষে কোনো প্রভাব ফেলে না, কিন্তু হাড়ের অস্থিমজ্জা কোষ (বোন ম্যারো সেল) যুক্ত করা হলে ত্বকের কোষে বয়স কমার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এ থেকে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, অস্থিমজ্জা কোষের সঙ্গে তরুণ রক্তের সিরাম বিশেষ পদ্ধতিতে সংযুক্ত হয়। তাতে কোষের বয়স কমার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
জার্মানির বিজ্ঞানীরা গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ‘ত্বক আমাদের দেহের সবচেয়ে বড় অঙ্গ। বার্ধক্য নিয়ে গবেষণা করার জন্যেও ত্বক সবচেয়ে উপযোগী। বার্ধক্যের লক্ষণগুলো ত্বকেই সবচেয়ে আগে ধরা পড়ে। মানুষের সার্বিক স্বাস্থ্য তার ত্বকে প্রতিফলিত হয়।’ ত্বকের টিস্যুর বয়স নির্ধারণ করতে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ মিথাইলেশন এবং কোষের বিস্তার পরিমাপ করে দেখেছেন। তরুণ রক্তরসের সঙ্গে অস্থিমজ্জা কোষের সংস্পর্শে ত্বকের বয়স হ্রাস পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
‘গোটা প্রক্রিয়াটিতে আমরা বেশ কিছু প্রোটিনকে চিহ্নিত করেছি, যা আমাদের ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করার কারণ হতে পারে। বার্ধক্যের প্রেক্ষাপটে এগুলো নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।’ তাদের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অস্থিমজ্জা কোষের সংস্পর্শে এসে তরুণ রক্তরস ৫৫টি ভিন্ন ভিন্ন প্রোটিন তৈরি করেছে। তার মধ্যে অন্তত সাতটি যে কোনো ত্বকের তারুণ্যের জন্য উপযোগী। তবে এই প্রোটিনগুলো নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
জার্মানির গবেষকেরা দেখালেন, ত্বকের যৌবন ফেরানোর ক্ষমতা থাকলেও থাকতে পারে রক্তের মধ্যে। বিজ্ঞানের বদৌলতে এখন মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। মানুষ অনেক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকছেন। ত্বকের তারুণ্য ফেরানোর এই গবেষণা ভবিষ্যতেও যদি সফল হয়, তবে তা আগামী দিনে বৃদ্ধ বয়সের সহায় হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। বার্ধক্য হয়ে উঠবে আরও সতেজ, আরও সবল।
এমএন