অসাধুদের পরামর্শ শুনবেন না: মিয়ানমার সেনাপ্রধান
মিয়ানমারে বর্তমান ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং দেশটির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন।বৃহস্পতিবার দেশটির সামরিক বাহিনীর দাপ্তরিক তথ্যকেন্দ্র থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিবৃতিতে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা তাদের কাজ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন, তারা ‘অসাধু’ এবং দেশের জন্য ‘ক্ষতিকর’; তারা কখনোই মিয়ানমারের ‘মঙ্গল চায়নি’।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে আন্দোলনকারীদেরও ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মিন অং হ্লেইং। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, বিশ্বজুড়ে চলমান করোনা মহামারিতে সামাজিক দূরত্ববিধি না মেনে চললে সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হবে, যার ফলে মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গত সোমবার ভোরবেলায় রক্তপাতহীন এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। দেশটির সেনাপ্রধান মিং অং হ্লেইং এর নেতৃত্বে সংঘটিত ওই অভুত্থানে বন্দি হন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) বেশ কয়েকজন সদস্য। এদের মধ্যে সু চির মন্ত্রিসভার কয়েকজন মন্ত্রী, প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী ও পার্লামেন্ট সদস্যরাও রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
সেনাবাহিনীর অভুত্থানের অব্যবহিত পরই ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন মিয়ানমারের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গণপ্রতিবাদে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা ‘অমঙ্গল দূর হবে’ বলে স্লোগান দেন এবং রীতি অনুযায়ী অমঙ্গল দূর করতে হাঁড়ি-পাতিল বাজান।
চলমান বিক্ষোভ ও অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দেশটির রাজধানী নেইপিদো, প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনসহ অন্যান্য শহরের ৭০টি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, সামরিক সরকারের অধীনে তারা চিকিৎসাসেবা দেবেন না। পরে তাদের অনুসরণ করে ধর্মঘটে যান দেশটির সরকারি প্রশাসনের অন্যন্য দপ্তর ও সেবাখাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
তবে মিয়ানমারে দেশজুড়ে বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে দেশের কয়েকটি এলাকায় সামরিক শাসন জারি এবং আন্দোলনকারীদের হুশিয়ারি দিলেও এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বলপ্রয়োগের পথে হাঁটেনি জান্তা সরকার।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ