দেশের সবচেয়ে প্রাণঘাতী যত অগ্নিকাণ্ড
বাংলাদেশে বড় ধরনের প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে। অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও দুই শতাধিক মানুষ। ফায়ার সার্ভিস বলছে, লাশের সারি আরও দীর্ঘ হতে পারে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
দেশে কারখানা ও অন্যান্য ভবনে বিশেষ করে শিল্প স্থাপনায় নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘন করা হয়। যে কারণে প্রায়ই এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটছে।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ডের কিছু ঘটনা ঢাকা পোস্টের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। যেগুলোর বেশির ভাগই শিল্প স্থাপনায় ঘটেছে...
ডিসেম্বর ২০২১
বিজ্ঞাপন
গত বছরের ডিসেম্বরে সুগন্ধা নদীতে একটি লঞ্চে আগুন ধরে যায়। ইঞ্জিন থেকে ছড়িয়ে পড়া সেই আগুনে অন্তত ৩৮ জনের প্রাণহানি ঘটে।
• পড়ুন সেই ঘটনা: সুগন্ধায় লঞ্চে আগুনে নিহত বেড়ে ৩৮
জুলাই ২০২১
রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ-পূর্বের নারায়ণগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুসের কারখানায় লাগা আগুনে অন্তত ৫২ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন।
• পড়ুন সেই ঘটনা: রূপগঞ্জে কারখানায় আগুনে নিহত অন্তত ৫২
মার্চ ২০২১
কক্সবাজারে একটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত ও ৫৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় বাস্তুচ্যুত হন আরও প্রায় ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা।
• পড়ুন সেই ঘটনা : কক্সবাজারে আগুনে ১৫ রোহিঙ্গা নিহত: জাতিসংঘ
সেপ্টেম্বর ২০২০
ঢাকার বাইরে ফতুল্লার একটি মসজিদে গ্যাস পাইপলাইন বিস্ফোরণে ১৭ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হন। এশার নামাজ চলাকালীন পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
• পড়ুন সেই ঘটনা : ফতুল্লায় মসজিদে গ্যাস বিস্ফোরণে ৩৪ জনের প্রাণহানি
ডিসেম্বর ২০১৯
ঢাকার অদূরে একটি ফ্যান কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১০ জন নিহত হন।
নভেম্বর ২০১৯
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে গ্যাসের পাইপ লাইন বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত ও আরও ৮ জন আহত হন।
মার্চ ২০১৯
রাজধানী ঢাকার একটি ২২ তলা বাণিজ্যিক ভবনে আগুন লেগে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হন। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় আরও ৭০ জন আহত এবং আরও অনেকে আটকা পড়েন।
ফেব্রুয়ারি ২০১৯
• শতাব্দী প্রাচীন পুরান ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটে।
• চট্টগ্রামের একটি বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুই শতাধিক ঘর পুড়ে যায়। এতে কমপক্ষে ৮ জন নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হন।
ফেব্রুয়ারি ২০১৭
ঢাকার একটি টেক্সটাইল কারখানায় আগুনে ছয় শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে।
জানুয়ারি ২০১৫
ঢাকার উপকণ্ঠে একটি প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ১৩ জনের মৃত্যু এবং আরও কয়েক ডজন আহত হন।
নভেম্বর ২০১২
ইউরোপ এবং আমেরিকার নামিদামি বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের পোশাক সরবরাহকারী ঢাকার তাজরিন ফ্যাশনস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ১১২ জন শ্রমিক নিহত এবং ১৫০ জনেরও বেশি আহত হন। শর্ট সার্কিট থেকে এই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে কারখানায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছিল এটি।
ডিসেম্বর ২০১০
বিশ্বব্যাপি খুচরা বিক্রেতাদের সরবরাহকারী ঢাকার বাইরের একটি ক্রীড়া পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হন। এই ঘটনায় আহত হন আরও ১০০ জন।
ফেব্রুয়ারি ২০১০
ঢাকার উপকণ্ঠে একটি পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ২১ শ্রমিক নিহত এবং আরও প্রায় ৫০ জন আহত হন।
ফেব্রুয়ারি ২০০৬
চট্টগ্রামে একটি টেক্সটাইল কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৬৫ শ্রমিক নিহত ও কয়েক ডজন আহত হন।
জানুয়ারি ২০০৫
ঢাকার বাইরের একটি পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ২২ জন নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হন।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস