বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের তীব্র হট্টগোলের মাঝে সংসদ কক্ষ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। মঙ্গলবার দেশটির সংসদ অধিবেশনে বিরোধীরা গোটাবায়াবিরোধী স্লোগান ও চিৎকার শুরু করলে সংসদকক্ষ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।

দেশটির সংসদের সদস্য হর্ষ ডি সিলভা টুইটারে এই ঘটনার একটি ভিডিও টুইট করেছেন। এতে দেখা যায়, সংসদ সদস্যরা গোটাবায়ার বিরুদ্ধ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় তাদের অনেকের হাতে ‘গোটা বাড়ি যাও’ লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল।

ভিডিওতে দেখা যায়, বিরোধীদের তোপের মুখে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে পাশে বসা সহযোগীদের সাথে কথা বলেন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি উঠে সংসদ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান।

ভিডিওর ক্যাপশনে হর্ষ ডি সিলভা বলেছেন, ওহ! এভাবেই কয়েক মিনিট আগে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে আসা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ার বিদায় ঘটেছে। তিনি হ্যাশট্যাগে ‘গোটা গো হোম ২০২২’ লিখেছেন। শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা কখনই ঘটেনি বলে জানিয়েছেন হর্ষ। টুইটে তিনি বলেছেন, গোটাবায়া আসন থেকে উঠে চলে যেতে হয়েছে।

দুই কোটি ২০ লাখ মানুষের এই দেশটিতে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এবারই প্রথম ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে।  মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাওয়ায় ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য এবং জ্বালানিও আমদানি করতে পারছে না দেশটি। জ্বালানি সংকটের কারণে দেশটির বেশিরভাগ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে লঙ্কানদের। 

জ্বালানি বাঁচাতে দেশটির জরুরি নয়, এমন পরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তৃতায় লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, দেশ এখন দেউলিয়া হয়ে গেছে। আগামী বছরের শেষের দিক পর্যন্ত এই অর্থনৈতিক সংকট দীর্ঘায়িত হবে। 

শ্রীলঙ্কা বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে বেইলআউট পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে। ঋণ পুনর্গঠন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার পর আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে সংস্থাটির কাছ থেকে বেইলআউট পাওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

বিক্রমাসিংহে বলেছেন, আমরা এখন দেউলিয়া দেশ হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করছি।

সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি।

এসএস