আইএসে যোগ দেওয়া শামীমার ভাগ্যে কী ঘটছে, জানা যাবে আজ
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম
জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগমের যুক্তরাজ্যে ফেরার বিষয়ে রায় ঘোষণা করছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার ব্রিটেনের সর্বোচ্চ আদালত এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্কুলশিক্ষার্থী সিরিয়া থেকে ফেরার অনুমতি পাবেন কিনা তা জানাবেন।
আইএসে যোগ দিতে ১৫ বছর বয়সে বন্ধুদের সঙ্গে ব্রিটেন ছেড়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন শামীমা। এই বিষয়ে দীর্ঘ ছয় বছর পর আজ আরও পরের দিকে রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছে ব্রিটেনের আদালত।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাজ্য সরকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনা করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই আইএস জঙ্গির নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল ২০১৯ সালে; যাতে তিনি ব্রিটেনে ফিরতে না পারেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, সরকারি সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের কাছে করা মামলায় অংশ নিতে তাকে দেশে ফিরতে দেওয়া ন্যায়সঙ্গত হবে কিনা শুক্রবার ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারক সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
বিজ্ঞাপন
শামীমা বেগমের আইনজীবীদের যুক্তি, শুনানিতে অবাধ অংশ নিতে না পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বহাল হয়ে যাবে।
বর্তমানে ২১ বছর বয়সী শামীমা সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আইএসের সশস্ত্র জঙ্গিদের এক ডেরায় বন্দি রয়েছেন। যুক্তরাজ্যে বিচারাধীন মামলায় নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে অথবা ভিডিও কলের মাধ্যমে শুনানিতেও অংশ নিতে পারছেন না তিনি।
এর আগে, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব লন্ডনের এই বাসিন্দা দুই বান্ধবীকে নিয়ে আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় যান। চার বছর পর ২০১৯ সালে সিরিয়ার এক শরণার্থী শিবিরে তাকে দেখা যায় বলে ব্রিটিশ গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়। এর কিছুদিন পর সেখানে তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
গত বছরের জুলাইয়ে শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ায় ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে ব্রিটেনের আপিল আদালত জানান। সিরিয়ায় শরণার্থী শিবিরে থেকে মামলার কার্যক্রমে অংশ নেওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দেয় এই আদালত।
আইএসের শাসনের পতন ঘটলে দুই বছর আগে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করেন।
পরে দেশটির সরকার আপিল আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করতে ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আহ্বান জানায়। শুক্রবার শামীমার যুক্তরাজ্যে ফেরার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণা করবেন।
১৯৮১ সালের ব্রিটিশ ন্যাশনালিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী, একজন নাগরিকত্ব হারাতে পারেন; যদি তার রাষ্ট্রহীন হওয়ার ঝুঁকি না থাকে। শামীমা বলেছিলেন, তিনি তার বোনের ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে সিরিয়া পাড়ি দিয়েছিলেন এবং সেই পাসপোর্ট তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হয় সীমান্ত পার হওয়ার পরই।
তাকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মনে করা হলেও তিনি বিবিসিকে বলেছিলেন, তার কখনও বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল না ও তিনি কখনও বাংলাদেশে যাননি। তবে নাগরিকত্ব হারানোর আগে ব্রিটিশ বাবা-মায়ের সন্তান হলে সেসন্তান ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবেই বিবেচিত হতে পারেন।
এসএস